মোংলায় আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবসে বক্তারা দখলদারদের লোভের শিকারে খুলনা বিভাগের ৩৭টি নদী সংকটাপন্ন

হারুন শেখ স্টাফ রিপোর্টার বাগেরহাট জেলা।

দেশে এমন কোন নদী বা জলাধার নেই যা দখলদারদের লোভের শিকার হয়নি। দেশে মোট নদীর সংখ্যা ১ হাজার ৮টি। খুলনা বিভাগে নদ-নদীর সংখ্যা ১৩৮টি। দখলদারদের লোভের শিকারে খুলনা বিভাগের ৩৭টি নদী সংকটাপন্ন। এরমধ্যে ২১টি নদী প্রবাহমান নেই, ৭টি নদী আংশিক প্রবাহমান রয়েছে। বিষ দিয়ে মাছ নিধনের ফলে সুন্দরবনের নদ-নদীর জলজ প্রাণী ও জীববৈচিত্র অস্তিত্বর সংকটে পড়েছে। ১৪ মার্চ শুক্রবার সকালে মোংলা ও পশুর নদীর মোহনায় নদী পরিদর্শন ও নদীতে অবস্থান কর্মসুচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা একথা বলেন। ”আমাদের নদী গুলো, আমাদের ভবিষ্যত” শ্লোগানে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), সুন্দরবন রক্ষায় আমরা ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপারের আয়োজনে এ নদী পরিদর্শন ও নদীতে অবস্থান কর্মসুচি আয়োজন করা হয়।
শুক্রবার সকাল ৭টায় নদী পরিদর্শন ও নদীতে অবস্থান কর্মসুচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুন্দরবন রক্ষায় আমরা’র সমন্বয়কারী, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মোঃ নূর আলম শেখ। আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন অধ্যক্ষ মোঃ সেলিম। এসময়ে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন পরিবেশযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান মিলন, ধরা’র নেতা গীতিকার মোল্লা আল মামুন, নারীনেত্রী কমলা সরকার, সুন্দরবন রক্ষায় আমরা’র নাজমুল হক, পরিবেশকর্মী ইদ্রিস ইমন, নদীকর্মী হাছিব সরদার, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ভলান্টিয়ার ডলার মোল্লা ও মেহেদী হাসান। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় অধ্যক্ষ মোঃ সেলিম বলেন আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অংশ হিসেবে গড়ে উঠেছে নদ-নদী গুলো। গঙ্গা, ব্রম্মপুত্র, মেঘনা, পদ্মা, যমুনা, পশুর, রুপসা, সুরমা, তিস্তা অসংখ্য নদীর বিস্তৃত জালিকা বাংলাদেশের প্রাণ। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন, উজানের দেশগুলোর পানি প্রত্যাহার, দূষণ, দখল, অপরিকল্পিত উন্নয়ন ও প্রশাসনিক দূর্বলতার কারনে বাংলাদেশের নদীগুলো আজ অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। নারীনেত্রী কমলা সরকার বলেন রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের দূষণের ফলে সুন্দরবনের নদ-নদীর মাছে বিষাক্ত পদার্থ পাওয়া যাচ্ছে যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। নদী ও সুন্দরবন বিনাশী রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি। সভাপতির বক্তব্যে সুন্দরবন রক্ষায় আমরা’র সমন্বয়কারী, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মোঃ নূর আলম শেখস বলেন শিল্প বর্জ্য, প্লাস্টিক বর্জ্য, জাহাজি বর্জ্য এবং কৃষি রাসায়নিকের কারনে নদী দূষণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশের নদীগুলোর অস্তিত্ব সংকটের আরেকটি প্রধান কারন। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং লবণাক্ততার কারনে উপকূলীয় নদী গুলোর পানি ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ছে। যা কৃষি ও সুপেয় পানির সংকট বাড়াচ্ছে। তিনি আরো বলেন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গঙ্গার পানি প্রবাহ হ্রাসের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সুন্দরবনের নদীগুলোতে লবণাক্ততা বাড়ছে। এরফলে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন ধ্বংস হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *