ফিরোজ রহমান স্টাফ রিপোর্টার:
১০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় ও ৪০ লাখ টাকার ফল লুটপাটের অভিযোগে মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান, ছাত্রলীগ নেতা, স্বাস্থ্য কমকর্তা, কলেজের অধ্যক্ষসহ ১৫৩ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।আজ বৃহস্পতিবার মেহেরপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ১ম (মুজিবনগর) আদালতে আসাদুল হক নামের এক ফল ব্যবসায়ী বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন মুজিবনগর উপজেলার অপসারিত চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অলোক কুমার দাস, মুজিবনগর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ওমর খৈয়াম উষা, আশরাফপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাহাজ উদ্দিন, দারিয়াপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুব আলম রবি, মোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন, সদরের কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম রেজা, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুস সালাম বাঁধন, মুজিবনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন, নুুরুল ইসলাম লালন, মাদার মাস্টারের ছেলে অনিক, লিপু, বিজয়, মুজিবনগর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান তকলিমা খাতুন তকলি।
মামলার বাদি পক্ষে আইনজীবী নজরুল ইসলাম বলেন, মামলাটি আমলে নিয়ে মুজিবনগর থানাকে এফআইআরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলার এজাহারে বাদির অভিযোগ, আসামীরা পরস্পর চাঁদাবাজ ও তৎকালীন ক্ষমতাধর ব্যক্তি। বাদী একজন মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী। তিনি তাহার এলাকাসহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় মৌসুমী ফল আম, কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারা ইত্যাদি ফল ক্রয় করে বিভিন্ন পাইকার ফড়িয়াদের নিকট বাগানে বাগানে বিক্রয় করে থাকেন। বিগত আওয়ামী সরকার নির্বাচনের পর আসামীরা বাদীকে বলে যে, তাদের সরকারের আমলে ব্যবসা করতে হলে বিশ লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে হবে। ঐ সময় বাদীর নিজের ও বিভিন্ন পার্টনারদের সহিত প্রায় এক কোটি টাকার ফল ক্রয় করা ছিল। আসামীদের হুমকীতে বাদী থানায় গেলেও পুলিশ প্রভাবশালী আসামীদের চাপে বাদীর কোনরূপ অভিযোগ এমনকি জি.ডি এন্ট্রি পর্যন্ত করেনি।
বাদী ও তার পরিবারের লোকজনদের আসামীদের মাধ্যমে খুন—গুম, অপহরণ ও লুটপাটের হুমকী আসলে ও আসামীরা স্বয়ং অস্ত্রসহ মহড়া দিয়ে চাঁদা দাবী করলে বাদী ২০১৮ সালের ১৫ এপ্রিল ১নং আসামী আমাম হোসেন মিলুর বাড়ি গিয়ে দশ লক্ষ টাকা চাঁদা দিয়ে ২০১৮—২০২০ সাল পর্যন্ত ব্যবসা করেন। তারপর পুনরায় আসামীরা বাদীর নিকট হইতে ত্রিশ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে ।বাদী আসামীদের বুঝান যে, সমস্ত বছরে ঐ পরিমাণ লাভ হয় না যেখান থেকে তাহাদের চাঁদা দিবে। কিন্তু আসামীরা বাদীর কোন কথায় আমলে নেয় নাই। ২০২১—২০২২ মৌসুমে আসামীরা বাদীর অনুমান ১৭টি বাগানের আম—লিচু মূল্য অনুমান চল্লিশ লক্ষ টাকার ফল লুট করে নিয়ে যায়। বাদী বাধা দিতে গেলে বাদীকে আসামীরা গণহারে এলোপাথাড়িভাবে লাথি, কিল, ঘুসি মারিয়া গুরুতর জখম করিয়া দেয়। অবৈধ সরকার ক্ষমতায় থাকায় বাদীকে আসামীরা বিজ্ঞ আদালত চত্বরে পর্যন্ত আসতে দেয় নাই। পুলিশের ভূমিকাও ছিল নিরব দর্শকের। আসামীরা দলীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হওয়ায় এবং তাদের দল দীর্ঘদিন ক্ষমতা থাকায় ও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ায় আসামীদের বিরুদ্ধে তিনি এ মামলা দায়ের করেন।