মাভাবিপ্রবিতে নিম্নমানের ইন্টারনেট সেবা নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ
মো:রাসেল চৌধুরী
মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি
বর্তমান যুগ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যুগ। এই সরকার প্রযুক্তি খাতকে ঢেলে সাজানোর জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন। মাভাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে ও এ ছোঁয়া লেগেছে। এর ধারাবাহিকতায় ক্যাম্পাসে ফ্রি ওয়াই ফাই সার্ভিস দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয় কয়েক বছর আগে। যাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া আরো বেগবান হয়।
কিন্তু শিক্ষার্থীরা সেই সেবা কতটুকু পাচ্ছেন! সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের কয়েকটি স্হানে ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেও খুবই ধীর গতির সেবা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া তৃতীয় একাডেমিক (১২ তলা) ভবনে শিক্ষকদের ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হলেও শিক্ষার্থীদের তা ধরা ছোঁয়ার বাইরে। কয়েকটি বিভাগ নিজ উদ্যোগে ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করেছে শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিতৃতিতে জানা যায়, কিছু কিছু জায়গায় ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেও সেগুলো সাধারণ শিক্ষার্থীরা ব্যবহারই করতে পারে না।
শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ওয়াইফাই এর গতি খুবই ধীরগতির হওয়ায় তা ব্যবহার অনুপযোগী। আবার ব্যবহার করতে গেলে বারবার ওয়াইফাই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই ধীরগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করে কোন কাজ সঠিক ভাবে করা যায় না। অনেক সময় নিয়ে লোডিং হওয়ায় ভোগান্তিতে আছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে রিসার্চ, থিসিস, প্রজেক্টের কাজে অতিরিক্ত খরচ করে ইন্টারনেট কিনতে হচ্ছে তাদের। যা শিক্ষার্থীদের জন্য কষ্টসাধ্য।
ইন্টারনেটের ধীরগতি নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মাঝে। বন্ধের দিনগুলো ইন্টারনেট সেবাও মাঝে মাঝে বন্ধ হয়ে যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে, কয়েকটি হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বলেন, “ওয়াইফাইয়ের অবস্থা খুবই বাজে। ওয়াইফাই নামে আছে, কোনো কাজে নেই। আমরা শিক্ষার্থীরা অনেক সময় ইন্টারনেট থেকে বই পড়ি। অনেক ডকুমেন্টস ডাউনলোড করতে হয় কিন্তু ইন্টারনেট দিয়ে কানেকশনই পাই না।”
ইএসআরএম বিভাগের শিক্ষার্থী সেলিম বলেন, কোন কারন ছাড়াই ক্যাম্পাসের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার তো হল গুলো তে নেট ই থাকে না। তাহলে নতুন করে কেন বঙ্গবন্ধু হল, মান্নান হলে ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক সংযোগ দেওয়া হলো ; মেরামত করা হলো? আর অন্যান্য দিন নেট থাকলেও তা খুবই ধীরগতির। যা ব্যবহার অনুপযোগী । ”
তবে সবচেয়ে ভোগান্তিতে আছেন মাভাবিপ্রবি’র নবনির্মিত শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল (মেয়ে) এবং শেখ রাসেল হল (ছেলে) এ অবস্থানরত আবাসিক শিক্ষার্থীরা। কেননা এখনো ওয়াইফাই সংযোগ স্থাপন করা হয়নি হল গুলোতে।ফলে মোবাইল ডাটা কিনে ইন্টারনেট ব্যাবহার করতে হচ্ছে তাদের।জানিয়ে রাখতে চাই এই দুই হলেই প্রায় এক হাজারের ও বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে।”
শেখ রাসেল হলের আরেক শিক্ষার্থী মামুন বলেন,”হলে মোবাইল নেটওয়ার্ক এর অনেক সমস্যা, যেই কারনে ডাটা কেনা থাকলেও সেটা ঠিকভাবে ব্যবহার করা যায় না। ওয়াইফাই থাকলে ক্লাসসহ যাবতীয় কাজ ইজিলি করা যেত। ওয়াইফাই নাই এই কারণে মাসে অনেক টাকা শুধু ডাটা কিনতেই চলে যায়, বাসা থেকে থাকা খাওয়ার যে টাকা দেয় সেই টাকা থেকে অনেকটা শুধু মাত্র এই কারণেই চলে যায়। অন্যদিকে কাজ শেষ হওয়ার অনেকদিন পার হয়ে গেলেও এখনো নতুন দুটি হলে ফ্রি ইন্টারনেট সংযোগের আওতায় আসে নি।”
ক্যাম্পাসে গিয়ে সরেজমিনে এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা মনে করেন দ্রুতই সাধারন শিক্ষার্থীদের এই ভোগান্তি রোধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট আইসিটি সেল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবেন।