বেকারত্বর অভিশাপ ঘোচাতে অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে “সৌখিন খামারি এসোসিয়েশন বাংলাদেশ”

মো:আসাদুজ্জামান খান-

মেহেরপুর জেলা সদর প্রতিনিধি :

একজন মানুষ যখন তার পেশা হিসেবে কাজ খুঁজে পায় না, তখন যে পরিস্থিতি তাকে মোকাবেলা করতে হয় তাকে বেকারত্ব বলে। বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান অভিশাপ হচ্ছে এই বেকারত্ব। দিন দিন বেড়েই চলেছে বেকারের সংখ্যা, যা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল একটি দেশের অর্থনীতির জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।
সততা এখন পাঠ্যপুস্তকে ছাপানো একটি শব্দ মাত্র। অথচ মানুষ হিসেবে বাঁচার জন্য সততা একটি অপরিহার্য বিষয়। দুর্নীতির কালো থাবায় বিপন্ন আজ মানবসভ্যতা। এ সর্বনাশা ব্যাধির মরণ ছোবলে বর্তমান সমাজ জর্জরিত, প্রশাসন থেকে শুরু করে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ-সংস্কতি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা সর্বত্রই চলছে দুর্নীতির মহোৎসব। একটি দেশের ভবিষ্যৎ হল শিক্ষিত ছাত্রসমাজ। দুর্নীতির করাল গ্রাসে সম্ভাবনায়, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ক্রমেই হয়ে উঠছে অনিশ্চিত। এই অনিশ্চয়তার পথেই, কর্মউদ্দিপনার পথ জুড়েছে “সৌখিন খামারি এসোসিয়েশন বাংলাদেশ”। যারা একটি স্লোগানকে সন্মুখে নিয়ে, পথ চলা শুরু করেছিল।

“করবো খামার গড়বো দেশ
বেকার মুক্ত বাংলাদেশ”

তারই ধারাবাহিকতায় ২৬ জানুয়ারি ২০২৩ ইং, সোস্যালমিডিয়ায় (ফেসবুক) গঠণ করে সৌখিন খামারি এসোসিয়েশন বাংলাদেশ । বর্তমানে যার সদস্য সংখ্যা ৩৭ হাজার প্লাস। শুধু সোস্যাল মিডিয়াতেই সীমাবদ্ধ নয়, ইতি মধ্যে তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা, থানা পর্যায়ে কমিটিও গঠণ করেছেন। তার মধ্যে, দিনাজপুর, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, ঢাকা, ফরিদপুর, মুন্সিগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, চাঁদপুর, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, সিলেট প্রভৃতি।

সৌগিন খামারি এসোসিয়েশন বাংলাদেশ এর প্রধান কর্মকতা, মেহেরপুর সদরের ০৩ নং ওয়ার্ড শাহজি পাড়ার সন্তান, মো:মাহফুজুল ইসলাম (সিয়াম), ৩৫ (গ্রুপ ক্রিয়েটর বা প্রতিষ্ঠাতা অ্যাডমিন) এর সাথে কথোপকথন এর সময়, তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, আপনাদের এসোসিয়েশন বাংলাদেশ এর মূল কার্যক্রম মূলত কি?

প্রথমেই তিনি জানান, দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর অর্ধেক শিক্ষিত বেকার। এই জনগোষ্ঠীকে জননশক্তিতে রূপান্তরিত করতে পারলেই, বেকারত্বের হার কমবে বলে মনে করেন। রংপুরে তার নিজের একটি খামারে ৩ জন বেকার মানুষের কর্মসংস্থান করেছেন ইতিমধ্যে। সে পেক্ষিতেই বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে, উদ্যোক্ত তৈরি করছেন। দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা, থানা পর্যায়ে ছোট ছোট সৌখিন খামারি (মুরগি) গড়ে তুলেছেন, তুলছেন। খুবই স্বল্প বিনিয়োগ করে, দেশী-বিদেশী মুরগীর বাচ্চা নিয়ে গড়ে উঠছে খামারগুলো, দেশের বিভিন্ন জায়গায়। প্রান্তিক লেভেল থেকেও শুরু হচ্ছে খামার গুলো।
বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও থানা পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা সকল ধরণের সহযোগিতা করে চলেছেন খামারীদের। তাদের সাথে যুক্ত আছেন প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ছাড়াও প্রশাসনিক (পুলিশ) কর্মীবৃন্দ। প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা খামার থেকে লাভবান হচ্ছে এবং আয়ের উৎস খুঁজে পেয়েছে।

এদিকে,মুরগীর মধ্যে রয়েছে, কলম্বিয়ান লাইট ব্রাহমা, ইউরোপিয়ান সিল্কি, আমেরিকান পুলিশ ক্যাপ, ইন্দোনেশিয়ান সুমাত্রা, আমেরিকান ব্রাফ ব্রাহমা, মালেশিয়ান শর্ট সেরেমা, গোল্ডেন সেব্রাইট ইউরোপ, আমেরিকান হোয়াইট পুলিশ ক্যাপ, ইউকোহামা ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি।

পরিশেষে এতটুকুই বলতে চাই, এই ধরণের প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন এদেশে আরও অনেক ভাবে গড়ে তুলে, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উদ্যোক্তা তৈরি করে বেকারত্ব কিছুটা হলেও দূর করা সম্ভব। এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরেরও উচিৎ, এই রকম সংগঠন গুলিকে রেজিষ্ট্রেশনের আওতায় আনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *