এন্ড্রো ত্রিপুরা
বান্দরবান প্রতিনিধি।।
দীর্ঘ সময়ের প্রতিক্ষার পর বাংলা অগ্রাহায়ন মাসের শুরুতে পাহাড়ে বসবাসকারী ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীরা পালন করে থাকে নবান্নের উৎসব।
এখন পাহাড়ে বইছে মারমা সম্প্রদায়ের প্রানের উৎসব নবান্ন উৎসব যা ত্রিপুরা ভাষায় মাইক্তা চাম পান্দা বলে থাকে।
নবান্ন উৎসব উপলক্ষে বান্দরবান সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের হাতি ভাঙ্গা পাড়া এলাকায় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের নবান্ন উৎসব মাইক্তা চাম পান্দা উপলক্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রা, জুমের নতুন ফসল দেবতার নামে উৎসর্গ,প্রার্থনা,ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের জুম চাষের সরঞ্জামাদি ও জুমের নতুন ফসল প্রদর্শন, নতুন ধানের পিঠা মেলা,ত্রিপুরাদের লোক সংগীত ও লোকনৃত্য প্রদর্শন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে শুক্রবার ২৪শে নভেম্বর সকালে হাতি ভাঙ্গা কমিউনিটি সেন্টারে জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।দেবতার উদ্দেশ্যে জুমের প্রথম ফসল উৎসর্গ, শান্তি ও মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা ও ত্রিপুরা নরনারীদের সম্মিলিত বর্নিল পোষাকে ঐতিহ্যগত নৃত্য, গান পরিবেশন উৎসবকে করেছে আরো আনন্দঘন।
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনিস্টিউট,বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের আয়োজনে বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনিস্টিউটের পরিচালক মং নু চিং এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন। নবান্ন উৎসবে আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য সি অং ম্রো, বান্দরবান সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ ফজলুর রহমান,সিনিয়র সহকারী কমিশনার অরূপ রতন সিংহ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট,মোহাম্মদ মোজাহেরুল হক,আব্দুল্লা আল মামুন,রাজীব কুমার বিশ্বাস, আসিফ রায়হান,প্রেসক্লাব সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাচ্চু সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের উর্ধতন কর্মকর্তা,ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনিস্টিউটের কর্মকর্তা বৃন্দ,৩নং সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান অংসাহ্লা মারমা, হাতিভাঙ্গা পাড়ার ইউপি সদস্য জগদীশ ত্রিপুরা মেম্বার,হাতি ভাঙ্গা পাড়া কারবারি বাদুহা ত্রিপুরা’সহ বান্দরবান কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিকস মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, পাহাড়ি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের এই উৎসবগুলো সম্প্রতির পরিচয় বহন করে,বিভিন্ন সম্প্রাদায়ের বৈচিত্র্যময় এই আনুষ্ঠানিকতা আমাদের মুগ্ধ করে।এই উৎসবমুখর পরিবেশ পাহাড়ে বাংঙ্গালী ও ও পাহাড়িদের ভাতৃত্বের বন্ধনে ঐতিহ্যের সৌন্দর্য বজায় রেখে সহাবস্থান নিশ্চিত করবে।
বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনিস্টিউটের পরিচালক মং নু চিং বলেন, পাহাড়ে ইংরেজি সেপ্টেম্বর, অক্টোবর,নভেম্বর মাসের শেষের দিকে এবং বাংলা অগ্রহায়ণ মাসের শুরুতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জনসাধারণ তাদের উৎপাদিত জুমের ফসল ঘরে তোলা উপলক্ষে নিজেদের ঐতিহ্যগত বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা পালন করে থাকে।বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনিস্টিউট এবং বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে জেলায় বিভিন্ন সম্প্রদায়েরএই উৎসবের পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে।বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বৈচিত্র্যময় এই উৎসব গুলো টিকিয়ে রাখার স্বার্থে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনিস্টিউট কাজ করে যাচ্ছে।