শহিদুল ইসলাম : ধনবাড়ী প্রতিনিধি (টাঙ্গাইল)
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার বীরতারা ইউনিয়নের কেন্দুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্য , দুর্নীতি, অনিয়মের কারনে
প্রধান শিক্ষক এ এম হাফিজুর রহমানের ভাগ্যের উন্নতি হলেও উন্নতি হয়নি কেন্দুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের। ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি এখনো ভঙ্গুরী রয়ে গেছে।
চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে কেন্দুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ এম হাফিজুর রহমান এর বিরুদ্ধে।
এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে সম্প্রতি চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর দুটি পদে নিয়োগ দিয়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের নামে নেয়া প্রয়াই ২০ লাখ টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে।
২০২২ সালে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, সহকারী প্রধান শিক্ষক, কম্পিউটার ল্যাব এসিস্ট্যান্ট কারিগরি শাখা , ইলেকট্রনিক্স ল্যাব এসিস্ট্যান্ট কারিগরি শাখা এই চারটি পদে প্রায়
৩২ – ৩৫ লক্ষ টাকা নিয়োগ বানিজ্য হয়েছে বলে অভিযোগ মেনেজিং কমিটির সদস্যদের।
সেই সাথে প্রভাব খাঁটিয়ে বিদ্যালয়ে নিজের খেয়াল-খুশিমতো আসা-যাওয়া ও বিনা ছুটিতে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগও আছে। বিদ্যালয়ের এমন দৈনদশা দেখে জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, ধনবাড়ী উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস,টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষা অফিস, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সহ বেশ কয়েকটি দপ্তরে প্রতিকার চেয়ে এবং নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধসহ সংশ্লিষ্ট ঘটনার তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেছেন বিদ্যালয়টির অভিভাবক সদস্য ও মেনেজিং কমিটির সদস্যরা।
কেন্দুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের কাছে তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে সে সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন ,আমার বিরুদ্ধে মামলা মোকাদ্দমা করার কর গা , আমার বিরুদ্ধে লেগবাতো লেইখা যা করার করো গা , তোমরা সাংবাদিতা কি করা হবা করো যাও তোমরা বলে তার অভিসকক্ষ ত্যাগ করে।
এদিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া ও অন্যান্য বিদ্যালয়ের বিষয়ে মিটিং করা হলে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের ডাকা হয় না , প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সাইন জাল করে বলে অভিযোগ মেনেজিং কমিটির সদস্যদের।
সাইন জাল বিষয়ে জানতে চাইলে
ম্যানেজিং কমিটির মহিলা সদস্য রহিমা বেগম এর মেয়ে নাছিমা আক্তার জানান, কেন্দুয়া স্কুলের দপ্তরি চান মিয়া একদিন একটা খাতা নিয়ে আমাদের বাড়িতে আসে এবং আমার মাকে খুজে বলে তোমার মা কোথায় আমি বলি মা বাড়িতে নাই নানির বাড়ি গেছে ,চান মিয়া বলে জরুরি একটা স্বাক্ষর লাগবে তোমার মা নাই তুমি স্বাক্ষর দিয়ে দাও ,তুমি দিলেও হবে প্রধান শিক্ষক বলে দিছে ,পরে তার কথা মত আমার মায়ের স্বাক্ষর আমি দিয়ে দেই ,তার পর কি হইছে আমি জানি না ,
এ বিষয়ে চান মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি মিছা কথা কমু না ,আমি রহিমা বেগমের বাড়িতে গিয়ে তার মেয়ের কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়ে এসেছি প্রধান শিক্ষকের কথায়।
তিনি আরো বলেন আমাদের প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান তার নিজের খেয়াল খুশি মত ইস্কুল চালায় ,দিন দিন স্কুলের ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা কমতেছে , আমাদের স্কুল সাইটের বেতন সবার প্রায় ২বছরের বাকি পড়েছে ,পরিক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা তুলে সেই টাকা দিয়ে আমাদের স্কুল সাইটের বেতন ভাতা ও স্কুলের উন্নয়নে ব্যবহার করার কথা থাকলেও সে এই টাকা গুলো ভাগ যুগ করে খেয়ে ফেলে ,কেউ যদি প্রতিবাদ করে তাকে কিছু দিয়ে থামিয়ে রাখে , এই তো কিছুদিন আগে আমাদের বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ৫০হাজার টাকা দেওয়াল করার জন্য দিয়েছিল সে টাকাটাও প্রধান শিক্ষক হাফিজুর খাইছে , যত টাকা আসে সব খায় প্রধান শিক্ষক , ৩১ বছর যাবত এই স্কুলে আছি আমি এমন প্রধান শিক্ষক আমার জিবনে দেখি নাই , এর মত টাকা খাউইয়া প্রধান শিক্ষক দেখি নাই ,
ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হাফিজুর বলেন , এই প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি অনিয়ম এতোই বেড়ে গিয়েছি আমরা ম্যানেজিং কমিটির ৫ জন সদস্য তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসন , টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষা অফিস ,ধনবাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস বরাবর ।
এই বিদ্যালয়ে আমরা এসেছিলাম উন্নয়ন করার জন্য ভাল কিছু করার জন্য। এখানে এসে আমরা যা দেখলাম এখানে আমাদের যারা ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আছি আমরা কত অবহেলিত ভাবে এখানে দুই বছর ধরে আছি ।
প্রধান শিক্ষক এ এম হাফিজুর রহমান উনি কোন কাজ আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেন না। আমাদেরকে কোন মিটিং এ ডাকা হয় না। তারা গোপন মিটিং করে আমাদের সাইন নিয়ে আসে বাড়িতে দপ্তরি পাঠিয়ে দিয়ে। বাড়িতে কেউ না থাকলে বা কেউ সাইন দিতে না চাইলে তার সাইন প্রধান শিক্ষক জাল করে তার কাজ উদ্ধার করে। এই প্রধান শিক্ষক কতবড় একটা দুর্নীতিবাজ যা বলার ভাষা নেই । সে কিভাবে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সাইন জাল করে মিটিং পাস করায় ।
ইতিমধ্যে আপনারা জানেন, এই স্কুলে কিছুদিন আগে চারজন নিয়োগ হয়েছে। সব তাদের মাধ্যমে হয়েছে। আমরা কিছু জানি না । আমাদের কথা হলো আমাদের সাইন ছাড়া এই সব হয় কিভাবে , এতো গুলো সাইন জাল হচ্ছে এই গুলো দেখার কি কেউ নাই ।
আপনারা আসছেন দেখেন স্কুলের কি অবস্থা ভাঙ্গা চাল , দেওয়াল । আমি আমার ক্ষুদ্র বয়সে এমন স্কুলের অবস্থা কোথাও দেখি না। আমাদের স্কুলে কোন বাউন্ডারি নেই, বাউন্ডারি না থাকার কারনে বিভিন্ন ছেলে এসে মাদক সেবন করে।
আর এই স্কুলে আমাদের কিছু প্রাক্তন ছাত্র এলাকার ছোট ভাই তারা স্কুলের জন্য কিছু অনুদান দিয়েছে বাউন্ডারি করার জন্য । আদোও বাউন্ডারি হয় নাই ,এই টাকা দিয়ে প্রধান শিক্ষক কি করছে তা আমরা অবগত নই প্রধান শিক্ষকই বলতে পারবে।