মোঃ সারোয়ার হোসেন অপু
স্টাফ রিপোর্টারঃ
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের আবুল কালাম (৪৮) ক্যানসারে আক্রান্ত। তার চিকিৎসা চালাতে পরিবারটি এখন নিঃস্ব হয়ে গেছে। পরিবারের ৪ জন সদস্যের এক মাত্র উপার্জনকারী ছিলেন আবুল কালাম। আবুল কালাম ও তার পরিবারের দাবি সরকার-বিত্তবানরা এগিয়ে এলে আবারও স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করতে পারবে। ৫ মাস আগেও স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করত। হঠাৎ করে কাশি রোগ হলে বক্ষ বাধি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে শুরু করেন। চিকিৎসায় রোগ ভালো না হলে শরীরের বিভিন্ন রকম টেস্ট করতে থাকে এক সময় ধরা পড়ে ক্যানসার রোগ। রেফার্ড করে ক্যানসার হাসপাতালে সেখানে ভর্তির পর টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে না পেরে বাড়ীতে নিয়ে আসে। এখন ক্যানসার চিকিৎসা করাতে নিঃস্ব পরিবারটি। পরিবারের ৪ জন সদস্যের এক মাত্র উপার্জনকারী ছিলেন তিনি।
আবুল কালাম ক্যানসার আক্রান্তের আগে থেকেই স্ত্রীর চোখের নেত্রনালীতে ঘা, হাপানিসহ বিভিন্ন রোগে ভুগতেছিলেন। এখন পরিবারটি অসহায় ও মানবেতর জীবন যাপন করছেন।আবুল কালাম ঢাকায় একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুবাদে যে টাকা উপার্জন করতেছিলেন সে টাকা দিয়ে স্ত্রীকে চিকিৎসা করাচ্ছিলেন। নিজে ক্যানসার রোগে আক্রান্ত হওয়ায় চাকরিও এখন শেষে হয়ে গেছে।
পরিবারের কিছু না থাকাই অন্যের সাহায্য সহযোগিতায় খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে ক্যানসার ও স্ত্রীর চিকিৎসা । টাকার অভাবে এখনো ক্যানসার রোগের কেমো থেরাপি বা বড় ধরণের কোন চিকিৎসা নিতে পারছেন না আবুল কালাম। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে পরিবারের আবারও দায়িত্ব নিতে চান সে। আবুল কালাম ও তার পরিবারে দাবি, বর্তমান সরকার অনেক অসহায় ও অসুস্থ রোগীকে সাহায্য সহযোগিতা করে আসছেন। সরকার ও বৃত্তবানরা এগিয়ে আসলে বাঁচতে পারবে আবুল কালাম ও তার পরিবার।
ক্যানসার আক্রান্ত আবুল কালাম বলেন, আমার শুধু তিনটা মেয়ে একটা মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। পরিবারের সমস্ত দায়িত্ব আমার কাঁধের উপর।
আবুল কালাম জানান, বক্ষ বাধির চিকিৎসা নিতে যেয়ে জানতে পারি ফুসফুসে ক্যানসার হয়েছে। চিকিৎসা করাতে গিয়ে এখন নিঃস্ব।
আবুল কালাম বলেন, আমার রোজকারে চলত পুরো পরিবার। একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতাম।
আবুল কালাম আরও বলেন, আমার তিনটা মেয়ে একটা মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে। আমি আগের মতো আবারও সংসারের দায়িত্ব কাঁধে নিতে চাই। তাই সমাজের বিত্তবান, সমাজসেবী, সরকার, ও প্রবাসীদের প্রতি অনুরোধ রইলো আমার চিকিৎসার জন্য সাহায্য সহযোগিতা করার। আপনারা সহযোগিতা করলে ক্যানসার রোগের চিকিৎসা করতে পারবো।
আবুল কালামের স্ত্রী বলেন, আমি চক্ষু রোগে ভুক্ততেছিলাম টাকার অভাবে অপারেশন করতে পারিনাই,বিভিন্ন রোগে আমি ভুক্ততেছি। স্বামীও অনেক দিন থেকে অসুস্থ। একমাত্র উপার্জনকারী ছিল আমার স্বামী। আপনাদের সবার প্রতি অনুরোধ, আমার স্বামীর চিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসুন। টাকার অভাবে আমার স্বামীকে কেমো দিতে পারছি না।
তিনি আরো বলেন,ক্যানসার রোগের চিকিৎসার অনুদানের জন্য সমাজ সেবা অফিসে গেলে একটি আবেদন ফরম আমাকে দেয় এবং বলে ক্যানসার রোগের চিকিৎসার ডাক্তারের স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য। কয়েক জন্য ডাক্তারের কাছে ক্যানসার রোগের রিপোর্ট সহ আবেদন নিয়ে গেলে রুগী ছাড়া স্বাক্ষর করবেন না।ডাক্তারের কাছে রুগীকে নিয়ে যাওয়ার মত কোন টাকা নাই।তাই সমাজসেবা অফিসের অনুদানের টাকার আশা ছেড়ে দিয়েছি। আপনারা সহযোগিতা করলে আবারও সুস্থ হয়ে পরিবারের দায়িত্ব নিতে পারবে। অসহায় মানুষের জীবন বাঁচাতে চিকিৎসা ব্যয়ে মানবিক সহযোগিতা আহব্বান
যদি কোন সহৃদয় ব্যাক্তি সহযোগিতা করতে চান তাহলে এই মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করবেন।
নগদ ০১৭৩৮৫৬১৩৯৯।
এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ইউপি সদস্য আনিছুর ফারুক বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সাহায্য সহযোগিতার আশ্বাস দেন। সেই সঙ্গে বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান করেন এই জনপ্রতিনিধি।
সমাজসেবা অফিসের দায়িত্ব প্রাপ্ত অফিসার রজতগোস্বামী বলেন, নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করলে আমরা প্রসেস করে জেলা সমাজসেবা অফিসে পাঠিয়ে দিয়ে থাকি।জেলা অফিস থেকে অনুদানের চেক আসলে রুগীর হাতে চেকটি তুলে দেওয়া হয়।