আবুবকর সম্পদ,জবি প্রতিনিধি:
বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর দেশব্যাপী ডাকা টানা তিন দিনের অবরোধের শেষ দিনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) প্রবেশের তিনটি ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় গেট, পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ গেট এবং ব্যাংক গেটে (চতুর্থ গেট) তালা লাগানো হয়েছে। এসময় ‘সর্বাত্মক অবরোধ’ লেখা সম্বলিত একটি করে প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সকাল ৬টার দিকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লার নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের তিনটি গেটে তালা ও প্ল্যাকার্ড ঝুলানো হয়।
জবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা বলেন, আওয়ামী লীগ ও দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর দুর্নীতির বিচার, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা, বিচার ব্যবস্থা সংশোধন করা ও এক দফা দাবি আদায়ের জন্যই অবরোধ পালিত হচ্ছে। গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়ার প্রতিষ্ঠিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অবরোধ পালিত হবে না এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তাই জবি ছাত্রদল আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গেটে তালা দিয়ে দেশের জনগণের স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবরোধ পালনে উৎসাহিত করেছে।
জবি ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম বলেন, এক দফা দাবি আদায় এবং বিএনপির শান্তিপূর্ণ মহা সমাবেশে পুলিশলীগ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বর্বর হামলা ও গণ গ্রেফতারের প্রতিবাদে আমরা অবরোধ পালন করছি। অবরোধের তৃতীয় দিনে আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গেটে তালা ঝুলিয়েছি এবং দেশনায়ক তারেক রহমানের জনগনের স্বার্থ রক্ষার অবরোধ সফল করার লিখিত ব্যানার লাগিয়ে দিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ফ্যাসিস্ট সরকারের আজ্ঞাবহ প্রশাসন জনগনের স্বার্থ রক্ষার অবরোধকে সমর্থন জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখবেন। আর যদি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ না রাখেন সামনের যে কোন সহিংসতা এবং অপ্রতিকর ঘটনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়ী থাকবেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল বলতে চায় আমাদের এক দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত যতই হামলা মামলা গ্রেফতার করুক আমরা রাজপথে ছিলাম, আছি, জনগণের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথেই থাকবো ইনশাল্লাহ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তালা ঝুলিয়ে দেয়ার পর গেটগুলো দীর্ঘক্ষণ তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল। পরে সকাল ৮টার দিকে ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চলে এলে ২য় গেটের তালা ভেঙে যাতায়াত ব্যবস্থার সুযোগ তৈরি করে দেন শিক্ষার্থী ও গেট সংশ্লিষ্ট থাকা নিরাপত্তারক্ষীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের নির্দেশে তালা ভাঙা হয়েছে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, যে বা যারা এ তালা লাগিয়েছে সিসি ফুটেজ পর্যালোচনার মাধ্যমে তাদেরকে শনাক্ত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ দেওয়া হবে। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
সিসি ফুটেজ থেকে দেখা যায়, একজন সাদা পোশাকে হেল্মেট পড়া লোক ভোর ৫টা ১০মিনিটে এসে ২য় গেটে তালা দিয়ে দৌড়ে পালায়।
তালা দেওয়া প্রসঙ্গে জবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম ফরাজী বলেন, বুকের পাটা থাকলে ছাত্রদল দিনের বেলা ক্যাম্পাসে আসুক, রাতের আধারে ভাড়াটিয়া লোক দিয়ে হয়ত তালা ঝুলিয়েছে। ছাত্রদলের অছাত্রদের অপশক্তি রুখতে জবি ছাত্রলীগ বদ্ধ পরিকর।