ইবি প্রতিনিধি:
নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন শাপলা ফোরামের প্রীতি সম্মিলনী সম্পন্ন হয়েছে।
এ উপলক্ষে সোমবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে ‘হাসিনা: এ ডটার্স টেল’ সিনেমাটি প্রদর্শন করা করা হয়। এর আগে স্মৃতি আলাপনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু করে সংগঠনটি।
এসসময় ফোরামের ২৩ জন নবীন সদস্যকে বরণ করে নেওয়া হয়। পরে টিএসসিসির করিডোরে শিক্ষক ও তাদের সন্তানদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে খেলাধুলার আয়োজন করা হয়।
সিনেমা চলাকালে ফোরামটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমানের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর-রশিদ-আসকারী, সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান, সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক অধ্যাপক ড. শাহজাহান আলী, পুন্ড্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনম রেজাউল করিম, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও ফোরামটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমানের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন জীববিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. রেজওয়ানুল ইসলাম, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিন, পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদসহ ফোরামটির অন্যান্য সদস্যরা।
এর আগে স্মৃতি আলাপন অনুষ্ঠানে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর-রশিদ-আসকারী বলেন, ‘শাপলা ফোরাম না থাকলে এ বিশ্ববিদ্যালয় আজকের এই অবস্থানে কখনও আসতে পারতো না। সারাদেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান সকলের জন্য যে পাঠ্যক্রম প্রচলিত আছে তার বাইরে গিয়ে পরিপন্থী এক অভিনব পাঠ্যক্রমকে বাস্তবায়ন করার জন্য প্রতিষ্ঠাতারা এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে। একটা সময় এখানে সহ শিক্ষার কোনো সুযোগ ছিলোনা,
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা চর্চা ছিলো নিষিদ্ধ, অসাম্প্রদায়িকতার চর্চা নিষিদ্ধ ছিলো। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় এখন বড় মাদ্রাসা থেকে অন্যান্য জেনারেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যায়ে চলে গেছে। এটাই শাপলা ফোরামের অবদান, শাপলা ফোরামের কারণেই বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমান রূপ পরিগ্রহ করেছে। এখন দেশ বিদেশের সনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে তুল্যমূল্য বিচারে ইবি টিকে যাবে। এই শাপলা ফোরাম আমাদেরকে যা দিয়েছে তার ঋণ শোধ করা কখনও সম্ভব নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই ক্ষমতায়ন এবং সাফল্যের জন্য শাপলা ফোরাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে কৃতজ্ঞ। তিনিই আমাদের সহযোগিতা করেছেন, আমাদের পথকে কুসুমাস্তীর্ণ করেছেন। যার কারণে আজ ফুলে ফলে সুশোভিত এই শাপলা।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘যে চেতনায়, যে দর্শনের কারণে শাপলা ফোরামের গঠন হয়, প্রত্যেকটা জায়গায় তা স্মরণ করা উচিৎ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কারণেই আমরা আজ এখানে দাঁড়িয়ে বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারছি। একটা স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি। ওনার চেতনা এবং দর্শনের কারণেই উদ্বুদ্ধ হয়েই আমরা শাপলা ফোরাম গঠন করেছি। আমরা বঙ্গবন্ধুর দর্শনের কথা বলবো, প্রগতিশীলতার কথা বলবো কিন্তু অন্য দিকটা ভুলে গেলে চলবে না। আমাদের ভেতর কিছু মতলববাজ আছে। তাদের থেকে সাবধান থাকতে হবে। আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিদের প্রতিহত করতে হবে। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করি। শাপলা ফোরামের মাধ্যমে প্রগতিশীলতা চর্চার একটি ফিল্ড উপহার দিয়ে প্রমাণ করতে চাই যে আমরা পারি।’
পরে বিকালে র্যাফেল ড্র ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মধ্য দিয়ে শেষ হয় সম্মিলনী অনুষ্ঠান।