মোঃ মেহেদী হাসান
জাবি প্রতিনিধি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি)শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের স্কুল ‘আনন্দশালায়’ শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের নিয়ে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের স্কুল আনন্দশালা’র শিক্ষার্থী ইলহামের বয়স এখন ১৩। সে গত ৯ বছর ধরে আনন্দশালায় লেখাপড়া করছে। ইলহামের মা জানান, আনন্দশালা আমাদের চিন্তার জগতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনে দিয়েছে। এই পরিবর্তন উৎসাহব্যঞ্জক। আমরা যারা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের বাবা-মা, বাচ্চাকে কোন স্কুলে নিয়ে যাবো, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করতাম। আনন্দশালা আমাদের সেই দুশ্চিন্তা দূর করে আশা-ভরসার ঠিকানায় পরিনত হয়েছে। ইলহামের মা আরও বলেন, আমাদের বাচ্চারা স্কুল ড্রেস পড়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করছে, খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছে-এ দৃশ্য আমাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। তিনি বলেন, এখানে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের উন্নতি আশাব্যঞ্জক। বিগত ৯ বছরে ইলহামের শারীরিক এবং মানসিক পরিস্থিতির উন্নতি লক্ষণীয়। এখন আমরা আনন্দশালাকে ঘিরে স্বপ্ন দেখি।
অনুষ্ঠানে আনন্দশালার পরিচালক (অনারারি) পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা রইছ তার বক্তব্যে বলেন, অফুরন্ত সম্ভাবনার এক প্রতীক শেখ রাসেলের জন্মদিনে আমরা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের নিয়ে আরও অনেক অফুরন্ত সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখতে চাই। তাই এই শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজন করা হয় চিত্রন্তন প্রতিযোগিতার। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন এই শিক্ষার্থীরা তাদের কলম দিয়ে তাদের অফুরন্ত কল্পনার উন্মোচন করবে। ড. রুমানা তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের বাবা-মা এ প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে স্বপ্ন দেখেন, তিনি সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তায় বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের অভিভাবকদের মানসিক চাপ কমানো এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেখানো হবে। এতে অভিভাবকদের কষ্ট অনেকটা দূর হবে। তিনি প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামোগত সম্প্রসারণ এবং শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ সুরাইয়া শিখা। উদ্বোধনী পর্ব শেষে প্রধান অতিথি এবং বিশেষ অতিথিগণ চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা প্রত্যক্ষ করেন।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. রুমানা রইছ বলেন,আনন্দশালা অভিভাবকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা তাদের কলম দিয়ে তাদের অফুরন্ত কল্পনার উন্মোচন করবে।
আজ চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ বলেন, আনন্দশালা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন বাচ্চাদের বাব-মায়ের স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানে হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই প্রতিষ্ঠানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং এই প্রতিষ্ঠানের সার্বিক উন্নয়নে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের আহবায়ক ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. এ. মামুন আনন্দশালার অগ্রযাত্রায় যে কোনো পদক্ষেপে পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. এমদাদুল ইসলাম, পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর কবীর, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শারমীন সুলতানা, পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের শিক্ষক ড. অধ্যাপক মো. তাজউদ্দিন সিকদার।