নোয়াখালী প্রতিনিধি
নোয়াখালীর চাটখিলে উপজেলায় দক্ষিণ কড়িহাটি ভূঁইয়া বাড়ির জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন।মসজিদের দানবাক্সের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গোলাম কিবরিয়া (৪৩) নামের এক মুয়াজ্জিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতার গোলাম কিবরিয়া উপজেলার বাদুলী গ্রামের মরহুম নুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি দক্ষিণ কড়িহাটি ভূঁইয়া বাড়ির জামে মসজিদের (মসজিদুল কোবা) দীর্ঘদিনের মুয়াজ্জিন। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ওই মসজিদ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গিয়াস উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, মসজিদ কমিটির সঙ্গে সুসম্পর্কের জেরে দীর্ঘদিন ধরে মসজিদের দানবাক্স ও অনুদানের টাকা আত্মসাৎ করে আসছিলেন মুয়াজ্জিন গোলাম কিবরিয়া। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করলে মুসল্লিদের ওপর চড়াও হতেন তিনি। গত ১ মার্চ ঘাসেরখিল গ্রামের মৃত ফজলুল করিমের ছেলে মুফতি মোহাম্মদ এহসান উল্যাহ বাদী হয়ে মুয়াজ্জিন গোলাম কিবরিয়া, মসজিদের সভাপতি মাওলানা সেরাজুল ইসলাম (৬৫) ও সাধারণ সম্পাদক ছেরাজুল হকের (৫৭) বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন।
অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে জেলা ডিবি পুলিশকে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন আদালত। পরে গত ১৭ জুন ডিবির পরিদর্শক কবির হোসেন আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে মুয়াজ্জিন গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে মসজিদের দানবাক্স ও অনুদানের টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মেলে। মসজিদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
মামলার বাদী মোহাম্মদ এহসান উল্লাহ বলেন, মসজিদের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় মামলার পর মুয়াজ্জিন ও তার সহযোগীরা আমার বাড়িতে হামলা করেন। এখন তাকে গ্রেফতারের পর তার অনুসারীরা আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন। আমি প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা চাই।
এইদিকে মোয়াজ্জিনের মুক্তির দাবিতে শত শত মানুষের বিক্ষোভ এর প্রতিবাদে শুক্রবার জুমার নামাজের পর শত শত মুসল্লি কড়িহাটি গ্রামে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং মোয়াজ্জিন নির্দোষ দাবি করে তার মুক্তি দাবি করেন।
বিক্ষোভকারীরা জানান, স্থানীয় মুফতি এহসানুল্লাহর ষড়যন্ত্রে ও মিথ্যা মামলায় নির্দোষ মোয়াজ্জিন গোলাম কিবরিয়াকে জেলে পাঠানো হয়েছে। তারা বাদী এহসানউল্লাহ শাস্তি দাবি করেন।
ক্ষুদ্ধ বিক্ষোভ কারীরা আরো জানান, মোয়াজ্জিন মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।