আল আমিন, যবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন মহিলা ক্রিকেট লীগে (DPDWCL) খেলোয়াড়দের যেকোনো ইনজুরিতে খেলার মাঠে প্রাকটিসে ও ড্রেসিং রুমে ফিজিওর সাথে প্রাক্টিক্যালি চিকিৎসা সেবা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে যবিপ্রবির ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিটেশন বিভাগ।
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন মহিলা ক্রিকেট লীগ শুরু হয় ১৭ মে ২০২৪, যা (DPDWCL) নামে পরিচিত। যেখানে দশটি দল অংশগ্রহণ করে থাকেন। স্পোর্টস ফিজিওথেরাপি হল ফিজিওথেরাপি পেশার বিশেষ একটি শাখা, যেখানে খেলোয়াড়দের বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপের সাথে ইনজুরি ও বিভিন্ন কন্ডিশন এর নিরাময় ও উন্নতির জন্য চিকিৎসা করা হয়ে থাকে।
কিছুদিন আগে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি/জাস্ট)-এর ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন (পিটিআর) বিভাগের চতুর্থ পেশাগত বর্ষের শিক্ষার্থীরা “ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগ ২০২৩-২০২৪”- এ বিভিন্ন ক্লাবের স্পোর্টস ফিজিওর (ফিজিওথেরাপিস্ট) সাথে সহকারী ফিজিওথেরাপিস্ট হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন।
তারই ধারাবাহিকতায় এবার ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন (পিটিআর) বিভাগের চতুর্থ পেশাগত বর্ষের নারী শিক্ষার্থীরা “ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন মহিলা ক্রিকেট লীগ ২০২৩-২০২৪”- এ স্পোর্টস ফিজিওথেরাপির ক্লিনিক্যাল প্লেসমেন্ট সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। এই প্লেসমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের স্পোর্টস ফিজিওর (ফিজিওথেরাপিস্ট) সাথে সহকারী ফিজিওথেরাপিস্ট হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন।
বর্তমানে ক্রিকেট একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় খেলা। শুধু ক্রিকেটে নয় বরং ফুটবল বল, বাস্কেট বল,এইসব খেলাও বেশ জনপ্রিয়।খেলতে গেলে খেলোয়াড়রা চোট আঘাত পায় প্রতিনিয়ত।খেলোয়ারদের ফিট রাখা প্রয়োজন, না হলে তারা খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এছাড়াও খেলতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের ইনজুরি হতে পারে। এসকল ইনজুরি থেকে সেরে উঠতে একজন ফিজিওর প্রয়োজন অত্যাবশ্যক। একজন খেলোয়াড়কে ইনজুরির পর আবার মাঠে ফিরিয়ে নিয়ে আসে একজন ফিজিও। একজন খেলোয়াড়ের ফিট থাকা ও ইনজুরি থেকে সেরে উঠার জন্য ফিজিওথেরাপির বিকল্প নেই।
যবিপ্রবি/জাস্ট-এর পিটিআর বিভাগের শিক্ষার্থীরা অভিজ্ঞতা অর্জনের পাশাপাশি এই প্লেসমেন্টের মাধ্যমে-
* খেলোয়াড়দের আঘাতের ধরন ও তীব্রতা নির্ণয়ের কৌশল সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
* বিভিন্ন ধরনের আঘাতের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা লাভ করেছেন।
* আঘাতপ্রাপ্ত খেলোয়াড়দের পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা জানান, সম্পূর্ণ আলাদা রকমের অভিজ্ঞতার অংশ হতে পেরেছি আমারা যবিপ্রবির পাঁচজন শিক্ষার্থী। প্রথমতো সবার ইচ্ছা থাকে ক্রিকেটারদের একবার সরাসরি দেখার সেখানে তাদের সাথে এতো কাছে থেকে ট্রিটমেন্ট নিতে দেখা কমিউনিকেশন করা তাদের সাথে সত্যি অসাধারণ ছিলো সব কিছু স্বপ্নের মত ছিলো। বিশেষ করে জ্যতি আপু (অধিনায়ক ) অসাধারণ একজন ব্যক্তিত্ব।
এছাড়াও তারা প্রথমেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন যবিপ্রবির ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের স্বপ্নদ্রষ্টা ডা. ফিরোজ কবিরের প্রতি। বিভাগীয় চেয়ারম্যান ডা. জাহিদ হোসেন, ও প্রভাষক ডা. কে এম এমরান হোসেন কে এই সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান।
আরো বলেন, যেখানে আমরা সাধারণ রোগীদের নিয়ে চিন্তা করি সেখানে স্পোর্টস পারসনদের ট্রিটমেন্ট সমন্ধে ভাবতে হয়েছে। বিসিবির ফিজিও ডা. সুরাইয়া এবং ডা. লিজা কে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তাদের থেকে আমারা অনেক কিছু শিখতে পেরেছি একজন ফিজিওকে কতোটা ডাইনামিক হতে হয় আর কতো কিছু ম্যানেজ করতে হয় এবং অন ফিল্ড প্লেয়ারকে ম্যানেজ করে আবার ফিল্ডে ব্যাক করাতে একজন ফিজিও কতো বড় ভূমিকা পালন করে!
একজন স্পোর্টস ফিজিওথেরাপিস্ট মূলত স্পোর্টস ফিটনেস, নিউট্রিশন, ইনজুরি প্রিভেনশন, ম্যানেজমেন্ট এবং রিহ্যাবিলিটেশন এই সবগুলো সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। এছাড়াও ফিটনেস মেইন্টেন করা, ডায়েট মেনু ঠিক করে দেওয়া যাতে করে ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যালেন্স না হয় এবং স্পোর্টস ইনজুরি প্রিভেনশন হয়। কারণ প্রিভেনশন ইজ বেটার দেন কিউর। কোন খেলোয়াড় ইনজুরিতে আক্রান্ত হলে তাকে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা দিয়ে খেলার জন্য প্রস্তুত ফিজিওথেরাপিস্ট করে।থাকেন। আবার কোন খেলোয়াড় যদি কনকাশন, স্প্রেইন, স্ট্রেইন ইনজুরিতে আক্রান্ত হয় তাকে ম্যানেজমেন্ট এবং রিহ্যাবিলিটেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে পরিপূর্ণ সুস্থ করে তাকে খেলার জন্য প্রস্তুত করে থাকেন।
ক্রিকেট খেলোয়াড়দের জন্য ফিজিওথেরাপিস্টদের ভূমিকা অনন্য। ফিজিওথেরাপিস্ট ছাড়া যেনো ক্রিকেট লিগ অসম্পূর্ণ।