নিজস্ব প্রতিবেদন : কাঠালিয়া ঝালকাঠি
ঝালকাঠির রাজাপুর সরকারি কলেজে ডিগ্রি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরীক্ষার প্রবশেপত্র বাবদ জনপ্রতি ৭শ টাকা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২০২৪ সালে ডিগ্রি পরীক্ষার প্রবশেপত্র প্রদানে কেন্দ্র খরচের নামে কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বাধ্যতামূলকভাবে এ টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগে জানা গেছে।
সরকারি বিধি অনুযায়ী পরীক্ষার্থীদেরকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পরীক্ষার প্রবেশপত্র বিতরণের বিধান থাকলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ এর কোনো তোয়াক্কা করছেন না। তারা প্রকাশ্যে শিক্ষার্থীদের চড়ামূল্যে প্রবেশপত্র নিতে বাধ্য করায় সাধারণ মধ্যবিত্ত ও খেটে খাওয়া অভিভাবক ও তাদের সন্তান পরীক্ষার্থীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, আগামী বৃহস্পতিবার (২২ ফব্রেুয়ারি) ডিগ্রি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। তাই গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রবিবার থেকে রাজাপুর সরকারি কলেজে কর্তৃপক্ষ ডিগ্রি পরীক্ষার প্রবশেপত্র বিতরণ শুরু করে। এবিষয়ে কলেজের কর্তৃপক্ষ নোটিশ বোর্ডে প্রবশেপত্র বাবদ প্রত্যেক ছাত্রকে ৪৫০ টাকা করে দিতে হবে বলে নোটিশ লটকে রাখেন। তবে পরীক্ষার্থীরা কলেজের অফসি সহকারী মো. চুন্নুর কাছে গেলে ৭০০ টাকার নিচে দিলে হবে না বলে দাবি করেন। এ অবস্থায় যারা ৭০০ টাকা দিয়েছে কোন রসদি ছাড়া একটি সাদা খাতায় নাম লিখে প্রবশেপত্র প্রদান করছে বলে একাধকি শিক্ষার্থীরা জানায়।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ডিগ্রী পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় আশেপাশে অনেক কলেজের চেয়ে রাজাপুর সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বেশী ৩৫০০ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এখোন আবার বোর্ড নির্ধারিত কোন ফি না থাকা সত্বেও প্রবশেপত্রের বিনিময়ে ৭০০ করে টাকা নিচ্ছে। এতে অনেক পরীক্ষার্থী পারিবারিক অর্থসংকটের কারনে প্রবশেপত্র নিতে পারছে না।
এ বিষয়ে বেশ কয়েকজন অভিভাবক জানায়, আমাদের সব অভিভাবকের আয় উপার্যন এক রকম নয়। অনেকেই দুমুঠো ভাত খেয়ে কোনরকম জীবনযাপন করে ছেলে-মেয়েদের লেখা পড়ার খরচ চালায়। এরপরে এভাবে কলেজ কর্তৃপক্ষ দফায় দফায় অভিভাবকদের উপর বাড়তি টাকার চাপ দিলে ছেলেমেয়ের লেখা পড়া চালানোই তো সম্ভব হবেনা।
তারা আরো অভিযোগ করেন, সরকারি কলেজে পরীক্ষা কেন্দ্রের জন্য সরকারী ভাবেই অর্থ বরাদ্দ থাকে। তারপর আবার কেন্দ্র খরচের নামে পরীক্ষার্থীদের কীসের টাকা আদায় করা হচ্ছে সে বিষয়ে অধ্যক্ষ আমাদেও কোনো সদুত্তর দিচ্ছেন না।
এ বিষয়ে রাজাপুর সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলনে, এই অর্থ গোপনে নেয়া হচ্ছে না, এটা সবাই জানে, এতে বেআইনি কিছু নেই। পরীক্ষা কেন্দ্রে ইউএনওসহ প্রশাসনের লোক ও শিক্ষকদের নাস্তাপানি। এরপর অনেক পরীক্ষা হবে রমজান মাসে তখন শিক্ষকদের ইফতারি খাওয়ানো। এতো খরচের টাকা পাবো কোথায়। তাই পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা ইয়াসমিন সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে কেনো নাস্তার খরচ নিবে। উপজেলা প্রশাসন তো নাস্তা খাওয়ার জন্য কেন্দ্রে যায় না। এ বিষয়ে কেউ যদি অভিযোগ করে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমি কলেজ অধ্যক্ষের সাথে এ বিষয়ে অবশ্যই কথা বলবো।