পলাশবাড়ীতে ইউপি রাস্তার কোটি টাকার ২৬ শত গাছ গোপন নিলামে নামমাত্র মুল্যে বিক্রি।
সাগর আহম্মেদ গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের ৬ টি ওয়ার্ডসহ ইউনিয়নের সকল রাস্তার গাছ এক কাগজে নিধনের মহাপরিকল্পনা নিয়ে মাঠে কোমর বেধে নেমেছে ইউপি চেয়ারম্যান মো কবির হোসাইন জাহাঙ্গীর । ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় ও বন বিভাগের যোগসাজসে গোপনে পলাশবাড়ী উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নে মনগড়া নিলামের মাধ্যমে ইউপি রাস্তার প্রায় ১ কোটি টাকার ২৬ শত ৬৮ টি ইউক্যালিপটাস গাছ নাম মাত্র মুল্যে ২৯ লাখ টাকায় বিক্রি করার অভিযোগ হরিনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এব্যাপারে উক্ত ইউনিয়নের ইউপি সদস্য-সদস্যারা জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরের বরাবরে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা যায়।
দায়েরকৃত এ অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার ৯ নং হরিনাথপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. কবির হোসাইন জাহাঙ্গীর কোন ইউপি সদস্য-সদস্যাগণ ও পরিষদের সচিব কে অবগত না করে ইউনিয়নের ১ ,২ ,৩ ,৪,৮ ও ৯ ওয়ার্ডের হরিনাবাড়ী থেকে দেওয়া বাড়ী পযর্ন্ত,গাইবান্ধা-নাকাই রোডের বেড়াবাসা হইতে লেচুর ভিটা পযর্ন্ত,ফতের ভিটা হইতে কন্ঠার ভিটা পযর্ন্ত রাস্তা,হরিণাবাড়ী কদমতলি হইতে ভেলাকোপা পযর্ন্ত রাস্তার দুই পার্শ্বের ২ হাজার ৬’শ ৬৮ টি ইউক্যালিপটাস গাছ গুলো মনগড়া নিলাম দেখিয়ে চেয়ারম্যান গোপনে কাগজ তৈরী করে প্রায় ১ কোটি টাকার গাছ বিক্রি করেছে। গাছগুলো ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের ২১ তারিখে কর্তন করা কালে ইউপি সদস্য-সদস্যারা বাঁধা প্রদান করেন। এবং হরিনাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে খবর দেয়। হরিণাবাড়ী পুলিশ গাছগুলো আটক করে। এব্যাপারে উক্ত ইউপি সদস্যরা গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এর অনুলিপি প্রদান করেন বিভাগীয় কমিশার ও উপ-পরিচালক,স্থানীয় সরকার গাইবান্ধার এবং স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্যের নিকট প্রদান করেন।
এবিষয়ে ইউপি সচিব শাহনাজ পারভীন জানান, গাছ গুলো নিলামের বিষয়ে আমার জানা নেই। এ বিষয়ে চেয়ারম্যান বলতে পারবেন। গাছ দরপত্রের আহবান কমিটির সদস্য গাইবান্ধা জেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা এ এইচ এম শরিফুল ইসলাম জানান,নিলামের দিন অসুস্থ্য থাকায় তিনি উপস্থিত ছিলেন না মৌখিক ভাবে নিলাম বাস্তবায়নের নির্দেশ প্রদান করেন। আরেক সদস্য উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সুজন মিয়া জানান, নিলামের দিন সরকারি কাজে নিয়োজিত থাকায় নিলামে অংশ নেননি। তিনিও মৌখিক ভাবে দরপত্র অনুয়ায়ী নিলাম বাস্তবায়নে চেয়ারম্যনে কে নির্দেশ প্রদান করেছেন বলে জানান। এদিকে ইউপি চেয়ারম্যান মো. কবির হোসাইন জাহাঙ্গীর কোন কাগজ দিতে না চাইলেও তিনি জানান, নিলামের মাধ্যমে গাছ বিক্রি করা হয়েছে। এজন্য গাছ কর্তনের অনুমতিপত্র সমিতির নিকট প্রদান করেছি।
অত্র ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সচিব, সদস্য-সদস্যাগণকে অবগত না করে ইউপি রাস্তার দুই পার্শ্বের ২ হাজার ৬’শ ৬৮ টি ইউক্যালিপটাস গাছ গোপন নিলামের মাধ্যমে চেয়ারম্যান গোপনে কাগজ তৈরী করে প্রায় ১ কোটি টাকার গাছ মাত্র ২৯ লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছেন। গাছগুলো ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের ২১ তারিখে কর্তন করা কালে ইউপি সদস্য-সদস্যারা বাঁধা প্রদান করেন। এবং হরিনাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে খবর দেয়। হরিণাবাড়ী পুলিশ গাছগুলো আটক করে। এর মাঝে চেয়ারম্যান ইউপি সদস্যদের মোটা অংকের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে পুনরায় গাছ কাটা শুরু করেন। এরপর বিষয়টি ৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা পরিষদ হলরুমে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বিষয়টি গণমাধ্যম কমীরা উথাপন করলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে উক্ত ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট এর সঠিক জবাব চান। জবাবে চেয়ারম্যান কোন সঠিক উত্তর বা কাগজ দেখাতে ব্যর্থ হলে। এব্যাপারে জেলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন ও স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। এসময় বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান।
উল্লেখ্য, উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের ইউপি রাস্তার গাছ গুলো কোটি টাকা মুল্যের হলেও রাজস্ব ফাকি দিতে নিজের পকেট গরম করে ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় দরপত্র আহবান কমিটির সদস্যদের অনউপস্থিতিতে কাগজ কলমে শত শত গাছ নামমাত্র বিক্রির সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল ও স্থানীয় জনসাধারণ।