জেলা প্রতিনিধি, শরীয়তপুর
আছিফুর রহমান রাহুল
০৫ নভেম্বর ২০২৩
পারিবারিক কলহের জের ধরে তিন শিশু সন্তানকে নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন সালমা বেগম (৩০) নামের এক গৃহবধূ। এ ঘটনায় ২ শিশু সন্তানকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও নিখোঁজ রয়েছেন সালমা বেগম ও আরেক শিশু সাহাবীর।
রবিবার (৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার জপসা ইউনিয়নের মাইজপাড়া এলাকার কীর্তিনাশা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।
নিখোঁজ সালমা বেগম একই এলাকার আজবাহার মাদবরের স্ত্রী। জীবিত উদ্ধারকৃত দুই শিশু হলো- আনিকা (৩) ও জাফর (১)।
স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, ১০ বছর আগে ভোজেশ্বর ইউনিয়নের পাঁচক এলাকার লোকমান ছৈয়ালের মেয়ে সালমা বেগমের সাথে বিয়ে হয় জপসা ইউনিয়নের মাইজপাড়া এলাকার শাজাহান মাদবরের ছেলে আজবাহার মাদবরের সাথে। বিয়ের পর থেকেই সালমা বেগমের শাশুড়ি মিলি বেগম ও ননদ কলির সাথে বনিবনা হচ্ছিলো না। এই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে দ্বন্ধ চলছিল। গতকাল শনিবার রাতে এসব বিষয় নিয়ে শশুর বাড়ির লোকজনের সাথে কথা কাটাকাটি হলে সকালে তিন সন্তান সাহাবীর, আনিকা ও জাফরকে নিয়ে কীর্তিনাশা নদীতে ঝাঁপ দেন সালমা। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি দেখতে পেয়ে নদী থেকে আনিকা ও জাফরকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। এদিকে খবর পেয়ে নিখোঁজ সালমা বেগম ও তার ছেলে সাহাবীরকে উদ্ধার করতে কাজ শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
নিখোঁজ সালমা বেগমের মামা লিটন ছৈয়াল আমাদের বলেন, আমার ভাগ্নীকে বিয়ের পর থেকেই তার শশুড় বাড়ির লোকজন নির্যাতন করত। গতকাল রাতে তারা আমার ভাগ্নীকে মারধর করে। এই ক্ষোভে তিন বাচ্চাকে নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে সে।
সালমা বেগমের বাবা লোকমান ছৈয়াল বলেন, আমার মেয়েকে আর নাতিকে ওরা মেরে ফেলেছে। ওদের জন্যই আমার মেয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সালমা বেগমের স্বামী আজবাহার মাদবর বলেন, আমার স্ত্রীর সাথে কারো ঝামেলা ছিল না। কী কারণে ও আমার বাচ্চাদের নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে তাও জানিনা। কয়েকদিন ধরে ওর মাথায় সমস্যা হয়েছে। তাই ভেবেছিলাম ফকির৷ কবিরাজ দেখাবো।
শরীয়তপুর পুলিশের অতিরিক্ত সুপার (নড়িয়া সার্কেল) আহসান হাবীব বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি সালমা নামের এক গৃহবধু পারিবারিক কলহের কারণে তিন শিশু সন্তান নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে। দুই শিশুকে স্থানীয়রা উদ্ধার করতে পারলেও মা ও আরেক সন্তান নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।