পরিচালকের নির্দেশ্যে একের পর এক আটক হচ্ছে ওষুধ চোর
রামেক হাসপাতালে ইন্সট্রুমেন্ট ও ব্যান্ডেজ চুরির সময় কর্মচারি আটক
২৪-১০-২০২৩
পাভেল ইসলাম মিমুল রাজশাহী ব্যুরো :
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে সরকারী ইন্সট্রুমেন্ট ও ব্যান্ডেজ চুরির সময় এক কর্মচারিকে আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপরে রামেক হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারির অপারেশন থিয়েটার থেকে চুরির সময় পরিচ্ছন্নতা কর্মী কামরুজ্জামান রনিকে আটক করে রামেক হাসপাতালের পুলিশ বক্সের সদস্যরা। আটকের পর তাকে পরিচালকের কাছে সোপর্দ করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে,রামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা.এফ এম শামীম আহাম্মদ প্রতিবেদককে বলেন,আটক চোর কামরুজ্জামান রনিকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।চক্রান্ত সাথে যারা জড়িত আছে তাদেরকে দ্রুত তদন্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। কামরুজ্জামান রনি দৈনিক মজুরী ভিত্তিক কর্মচারি।
রামেক হাসপাতালের পুলিশ বক্সের ইনচার্জ মুকুল হোসেন জানান,রামেক হাসপাতালে প্রতিনিয়ত রোগিদের জন্য বরাদ্দ সরকারী ওষুধ ও সরঞ্জামাদি চুরি হয়। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি পরিচালক ওষুধ ও সরঞ্জামাদি চুরি রোধে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের কড়া নিদের্শনা দেন। ওষুধ চরির সাথে যেই জড়িত হোক না কেনো তাকে আটকের নিদের্শ দেন পরিচালক।
এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুপুরে রামেক হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা কর্মী কামরুজ্জামান রনি অপারেশন থিয়েটার থেকে সরকারী বিপুল পরিমান ইন্সট্রুমেন্ট ও ব্যান্ডেজ চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ বক্সের সদস্যরা তাকে আটক করে। আটকের পর তাকে পরিচালকের কাছে সোপর্দ করা হয়। তিনি বলেন,পরিচালকের নিদের্শ মোতাবেক তাকে রাজপাড়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা.এফ এম শামীম আহাম্মদ আরো জানান,গত প্রায় তিন বছর থেকে একটি চক্র হাসনপাতালের দামি ওষুধ ও সরঞ্জামাদি চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি জানার পর রামেক হাসপাতালে নিয়জিত আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী পুলিশ ও আনসার সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করা হয়। ওষুধ চুরি রোধে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য নিদের্শ দেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার এক কর্মচারি চোরকে পুলিশ আটক করেছে পুলিশ।
তিনি বলেন,সরকার বিনামূল্যে রোগিদের ওষুধ দেয়। কিন্তু হাসপাতালের কিছু কর্মচারি এসব ওষুধ চুরি করে বাইরে বিক্রি করে। এতে রোগিরা সরকারী ওষুধ থেকে বঞ্চিত হন। তিনি বলেন,আমি যতদিন দায়িত্বে আছি ততদিন এ চোর সিন্ডিকেট যতই ক্ষমতাশীন হোক তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে গত ১৯ অক্টোবর রাতে চার কাটুন প্রায় লাখ টাকা মূল্যের ডেঙ্গু রোগিদের জন্য বরাদ্দ স্যালাইনসহ মেহেদী হাসান নামে এক কর্মচারিকে আটক করা হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে,অর্থপেডিক অপারেশন থিয়েটারের ইনচার্জ আব্দুর রহমানের সহযোগিতায় মেহেদি ওই স্যালাইন চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিল।
এসময় আনসার সদস্যরা মেহেদিকে আটক করে। যদিও ওই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। হাসপাতাল থেকে তাকে সতর্ক করা হয়। মাত্র ৫ দিনের ব্যাবধানে আবারো সরকারী ইন্সট্রুমেন্ট ও ব্যান্ডেজ চুরির সময় আটক হলো রনি নামে এক কর্মচারি।
রামেক হাসপাতালের পরিচালকের ভাষ্যমতে,রামেক হাসপাতালে যারা কর্মরত আছেন,তাদের মধ্যে অনেকেই সরকারী ওষুধ চুরির সাথে জড়িত। এসব কর্মচারিরা সরকারী ওষুধ চুরি করে বাইরে বিক্রি করে। আর রোগি ভর্তি হলে তারা হাসপাতালের ওষুধ পায় না। ওষুধ না পেয়ে রোগিরা বাইরে থেকে ওষুধ কিনে সেবন করেন। এমন কি রোগিরা বাইরে থেকে ওষুধ কিনে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গেলে সেখান থেকেও ওষুধ চুরি করা হয়। দীর্ঘদিন থেকে এ চুরির ব্যবসা করে আসছে কিছু অসাদু কর্মচারি চক্র। বিষয়টি জানার পর রামেক হাসপাতালের পরিচালক চুরি রোধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। সেই অবস্থান থেকেই এক এক করে ধরা পড়ছে ওষুধ চোর সিন্ডিকেটের সদস্যরা।