মো. নজরুল ইসলাম
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:
ঈদে মীলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া ঈদে মীলাদুন্নবী (সা.) র্যালি বাস্তবায়ন কমিটি সিলেট’র উদ্যোগে আয়োজিত ২৭ সেপ্টেম্বর (বুধবার) আধ্যাত্মিক রাজধানী পুণ্যভূমি সিলেট নগরীতে হাজার হাজার মানুষের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘মুবারক র্যালি’। এ র্যালিতে অংশগ্রহণের জন্য সকাল থেকেই সোবহানীঘাটস্থ হযরত শাহজালাল দারুচ্ছুন্নাহ ইয়াকুবিয়া কামিল মাদরাসা প্রাঙ্গণে সিলেট বিভাগের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা জমায়েত হন। সকাল ১০টা থেকে যুহরের পূর্ব পর্যন্ত প্রিয়নবী (সা.) এর জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী ও অতিথিবৃন্দ। বাদ যুহর শুরু হয় র্যালি। প্রিয়নবীর শানে রচিত কালজয়ী নানা কবিতার শ্লোক অঙ্কিত নানা রঙের ফেস্টুন ও প্লেকার্ড র্যালিতে শোভাবর্ধন করে। আশিকে রাসুল ছাত্রজনতার সুরে সুরে ধ্বনিত হয় প্রিয়নবীর প্রশংসাগীতি। সালাম সালাম নবী সালাম সালাম, মাওলা ইয়া সাল্লি ওয়া সাল্লিম, বালাগাল উলা বি-কামালিহি, শামসুদ্দোহা আসসালাম, এরকম অগণিত নাত-এর সুমধুর সুর লহরি নগরীর আকাশ বাতাস মুখরিত করে। র্যালিপূর্ব আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) জগতের জন্য আল্লাহর রহমত। তাঁর আগমনে পৃথিবী অন্ধকার থেকে আলোর পথ পেয়েছিল। তিনি দুনিয়া ও আখিরাতের সরদার। তিনি শুধুমাত্র নবুওয়াত প্রকাশের পরে নয় বরং বাল্যকাল থেকেই সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি ছিলেন মযলুমদের আশ্রয়স্থল। তায়েফের ময়দানে তিনি নির্যাতিত হয়েছিলেন। কিন্তু তায়েফবাসীদের কখনো বদদুআ দেননি। তিনি ছিলেন মানবতার শিক্ষাদাতা। তিনি বদরের যুদ্ধে যুদ্ধবন্দিদের সাথে যে মানবতা দেখিয়েছেন তা পৃথিবীর মানবতার ইতিহাসে অবিস্মরণীয়। তারা বলেন, আল্লাহর নবী (সা.) এর আলোচনা বিদআত নয় বরং উত্তম। শুধু তাই নয়, এটি সুন্নাতে এলাহি ও সুন্নাতে সাহাবা। উম্মতে মুহাম্মদীর আমল আল্লাহর হাবীব (সা.) এর দরবারে পৌঁছানো হয়। তাদের সালাত ও সালাম তাদের পরিচয়সহ তুলে ধরা হয়। পৃথিবী আজ বিপর্যস্ত। বর্তমানের মতো এত ঘন ঘন বিপর্যয় পৃথিবীতে পূর্বে দেখা যায়নি। একদিকে পৃথিবীব্যাপী দিকে দিকে অশান্তি, অপরদিকে গযবের ব্যাপকতা। এসব কিছু থেকে মুক্তির সমাধান রয়েছে উসওয়ায়ে মুসতাফায়। আমাদের ঘরে-বাহিরে, চিন্তা-চেতনায় রাসূল (সা.) এর আদর্শ অনুসরণ করা প্রয়োজন। তাঁর অনুসরণ ব্যতিত আল্লাহকে পাওয়ার কোনও পথ নেই। তাঁর উসওয়াকে ব্যক্তিজীবন ও সমাজজীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আল্লাহর হাবীবের আলোচনা, তাঁর আদর্শ সমাজে ছড়িয়ে দিতে হবে। আমাদেরকে তাঁর উম্মতের পরিচয় বহন করতে হবে। তাঁর সৌন্দর্যের পরিচয় বহন করতে হবে। যে সকল অসামাজিকতা আমাদের উপর চাপানো হচ্ছে, শয়তানের তাবেদার বানানোর যে দুরভিসন্ধি চলছে; এগুলো থেকে বেঁচে থাকতে রাসুল (সা.) এর আদর্শ অনুসরণের বিকল্প নেই। আমরা তাঁর উসওয়ার দিকে যত ধাবিত হবো, ততো আমাদের পরিবার ও সমাজ সুন্দর হবে।
র্যালিপূর্ব আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র মুহতারাম সভাপতি হযরত মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী।
প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহবুবুর রহমান ফরহাদ।
র্যালি বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক মোহাম্মদ হোসাইন এর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আতিকুর রহমান সাকের এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে র্যালিতে উপস্থিত ছিলেন আনজুমানে আল ইসলাহর মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা একেএম মনোওর আলী, ভারতের উজানডিহির সৈয়দ শামীম আহমদ আল মাদানী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবি এডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিব, আনজুমানে আল ইসলাহর সহ-সভাপতি মাওলানা জ.উ.ম আব্দুল মুনঈম মনজলালী, সাংগঠনিক সম্পাদক ড. মাওলানা মঈনুল ইসলাম পারভেজ, মাওলানা মাহমুদ হাসান চৌধুরী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা শেহাব উদ্দিন আলীপুরী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা নজমুল হুদা খান, অর্থ সম্পাদক মাওলানা গুফরান আহমদ চৌধুরী, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা আবু ছালেহ মো. কুতবুল আলম ও শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা সিরাজুল ইসলাম ফারুকী।
র্যালি বাস্তবায়ন কমিটির যুগ্ম আহবায়ক এস এম মনোয়ার হোসেন এর স্বাগত বক্তব্যে সূচিত র্যালিপূর্ব আলোচনায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তালামীযে ইসলামিয়ার সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা আজির উদ্দিন পাশা, হাফিয মাওলানা নজীর আহমদ হেলাল, মাওলানা বেলাল আহমদ, মাওলানা মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, মাওলানা রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী, তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল করিম মহসিন, সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা আতাউর রহমান, মাওলানা হুমায়ূনুর রহমান লেখন, সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ উসমান গণি, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জাহেদুর রহমান, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা হাফিজুর রহমান, সুনামগঞ্জ জেলা আল ইসলাহ’র সভাপতি মাওলানা তাজুল ইসলাম আলফাজ, সিলেট জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ছালেহ আহমদ, লতিফিয়া এতিমখানা ফুলতলীর ব্যবস্থাপক মাওলানা ফারহান আহমদ চৌধুরী রেদা, তায়্যিবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক মাওলানা মারজান আহমদ চৌধুরী, জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সবুর, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।
আরো উপস্থিত ছিলেন তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. আব্দুল জলিল, আব্দুস সামাদ আজাদ, অর্থ সম্পাদক সুলাইমান আহমদ চৌধুরী, অফিস সম্পাদক কাওছার হামিদ সাজু, সহ-অফিস সম্পাদক মাসরুর হাসান জাফরী, মারুফ আহমদ, সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-অফিস সম্পাদক হাফিয তৌরিছ আলী, কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক কবির আহমদ, সাবেক কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক শেখ আলী হায়দার, স্কুল ও কলেজ বিষয়ক সম্পাদক রেদওয়ান রাশেদ, সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য এনাম উদ্দিন আহমদ, কেন্দ্রীয় সদস্য- ইসলাম উদ্দিন চৌধুরী আরো অনেকই উপস্থিত ছিলেন।