
আহসান হাবীব দুলাল,ফুলবাড়ি (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার প্রত্যন্ত সুজনের কুঠি গ্রামের বাসিন্দা আবু সাঈদ এর মেয়ে সাথী খাতুন (২১) আজ জীবনযুদ্ধে পরাজিত হওয়ার মতো এক কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি। ২০২০ সালে সুজনের কুটি দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে শিক্ষাজীবন শেষ করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই শিক্ষার আলো আর নতুন জীবনের স্বপ্ন তাকে খুব বেশি দূর এগোতে দেয়নি।
দাখিল পাস করার পরপরই বিয়ে হয় সাথীর। স্বামী আনারুল হক একটি ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করতেন। সংসারের স্বপ্ন নিয়ে এগোতে চেয়েছিলেন সাথী। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পরই হিপ জয়েন্টের জটিল রোগে আক্রান্ত হন তিনি। ক্রমেই শারীরিকভাবে অচল হয়ে পড়েন, আজ তিনি নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে বাইরের আলো পর্যন্ত দেখতে পারেন না।
একমাত্র দেড় বছরের সন্তানকেও কোলে নেওয়ার সাধ আজও পূরণ হয়নি সাথীর। অসহ্য যন্ত্রণা আর শারীরিক অক্ষমতায় প্রতিটি দিনই তার কাছে বেঁচে থাকার লড়াই। স্বামীর আয়ই ছিল একমাত্র ভরসা, কিন্তু ইটভাটার কাজ বন্ধ থাকায় সংসারে নেমে এসেছে চরম অভাব-অনটন। দুই বেলা খাবারের সংস্থান করাই এখন অসম্ভব হয়ে উঠেছে, সেখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও ওষুধ তো কেবল স্বপ্ন।
অভাবের তাড়নায় স্বামী আনারুল হক সাথীকে তার বাবার বাড়িতে রেখে চলে গেছেন। অসহায় এই মায়ের আকুতি—যদি কোন হৃদয়বান ব্যক্তি একটি হুইলচেয়ার দিয়ে সহায়তা করতেন, তাহলে হয়তো সন্তানকে কোলে নিয়ে পৃথিবীর আলো দেখার সেই ছোট্ট স্বপ্নটা পূরণ হতো।