নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি–
নরসিংদীর শিবপুরে নকল ডিবি সেজে প্রায় ২১ লাখ টাকা মূল্যের ৭৫ ড্রাম সয়াবিন তেল ভর্তি ট্রাক ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
এসময় লুট হওয়া ৭৫ ড্রাম সয়াবিন তেল, হ্যান্ডকাফ, ডিবি লেখা কটি, লেজার লাইট, হাতুরি, পুলিশ ক্যাপ, ওয়াকি-টকি, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত পিকআপ গাড়ি, লুণ্ঠিত মালামাল বিক্রির নগদ ২ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।
সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান (পিপিএম)।
এর আগে গতকাল রোববার নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ডাকাতিতে জড়িত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানার সোনার গাও এলাকার মৃত তারা মিয়ার ছেলে মোঃ নাদিম হোসেন আনিছ (২৯), একই জেলার রূপসি এলাকার মৃত নুরুল হক মীরের ছেলে মোঃ তোহা মীর শাওন (৩৮), নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদী থানার ছোট গদাইরচর এলাকার মোঃ বাবুল মিয়ার ছেলে মোঃ অন্তর (২৮), একই থানার আলগী কান্দাপাড়া এলাকার মোঃ ইউসুফ মিয়ার ছেলে মোঃ আল আমিন (২৫), নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার পশ্চিম কেওঢালা এলাকার মোঃ ইব্রাহিম মিয়ার ছেলে মোঃ মামুন (২৯), হবিগঞ্জ জেলার সৈয়দপুর এলাকার মৃত শামসু মিয়ার ছেলে মোঃ সোহেল মিয়া (৩৫) ও ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার মালিহাটা এলাকার মোঃ আলী হোসেন এর ছেলে মোঃ ইলিয়াছ (২৩)।
পুলিশ সুপার জানান, গত ১৫ মার্চ রাতে নারায়ণগঞ্জের রূপসি এলাকার একটি তেল কারখানা হতে ৭৫ ড্রাম সয়াবিন তেল ভর্তি করে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ এর উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল একটি ট্রাক। রাত ১০টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর শিবপুরের ঘাসিরদিয়া পুকুরপার এলাকায় পৌঁছালে একটি প্রাইভেটকার পেছন দিক হতে সামনে গিয়ে পুলিশি সংকেত দিয়ে ট্রাকের গতিরোধ করে। এসময় ৭-৮ জন ব্যক্তি ট্রাক চালক ও তার সহকারীকে ডিবি পরিচয় দেয়। পরে চালক ও তার সহকারীকে ট্রাকে অবৈধ মালামাল আছে বলে নামিয়ে হ্যান্ডকাফ পরায়।
এক পর্যায়ে চালক ও সহকারীসহ তেল ভর্তি ট্রাক নিয়ে পালিয়ে যায়। যাবার পথে মাধবদী থানার ডাঙ্গা সড়কের পাশের একটি ইটভাটার সামনে হ্যান্ডকাফ খোলে গামছা দিয়ে হাত ও চোখ বেঁধে চালক ও সহকারীকে ফেলে রেখে ট্রাক নিয়ে পালিয়ে যায় ডিবি পরিচয় দেয়া ডাকাতেরা। এ ঘটনায় তেল মালিক বিমল পাল গত ১৭ মার্চ শিবপুর থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ তদন্ত করে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ডাকাতিতে জড়িত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে। তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তার হওয়াদের মধ্যে ৪ জনের বিরুদ্ধে নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন থানায় ডাকাতি ও বিভিন্ন অপরাধে মোট ২৪টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।