সুবাস চন্দ্র, জেলা প্রতিনিধ নওগাঁঃ
নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার কোলা ইউনিয়নের (৪১) নং ঝাড়ঘরিয়া স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা তানজিমা বানু(শিখার) বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নামে অর্থ নেওয়া, আবার সেই অর্থ দিয়ে সুদের কারবার করার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় জনমনে আলোচনা এবং সমলোচনার ঝড় বইছে।
অনুসন্ধান করে জানা যায়,প্রথমে স্কুল ফাঁকির অভিযোগ ওঠে ঐ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। স্কুল ফাঁকির বিষয় টি জানা জানি হলে শুরু হয় গভীর অনুসন্ধান। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। যেকোন বয়সী চাকরি প্রার্থীকে বিভিন্ন পলোভন দিয়ে নগদ টাকা হাতিয়ে নেয় ঐ শিক্ষিকা এবং সেই অর্থ দিয়ে এলকার বিভিন্ন ব্যবসায়ীর মাঝে স্টাম্প এবং চেক জামানত নিয়ে সুদের কারবার করে। এমন কি নিজ ভাগিনার কাছ থেকেও চাকরি দেওয়ার নামে নগদ ৭ লক্ষ টাকা গ্রহন করে। নয় বছর পার হলেও ভাগিনার চাকরি হয়নি আজও।
ঝাড়ঘরিয়া গ্রামের ভূক্তভোগী সাজু বলেন, আমি মুরগি ব্যবসা করতাম। ২০১২ সালে আমার ছোট ভাই রাজুকে ব্যাংকে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিলে, আমি ২ লক্ষ ৫০হাজার টাকা দেয়। চাকুরী না হলে আমি টাকা ফেরত চাইলে শিখা ম্যাডাম আমাকে একটি চেক দেয়। বছরের পর বছর ঘোরাঘুরি করে ব্যাংকে টাকা না পেলে মুরগি ও ফিড ব্যবসায়ী পিন্টু আমার বিষয়টি জেনে চেকটি নিয়ে আমার ব্যবসার বকেয়া টাকার সাথে সমন্বয় করে।
বামনকুড়িঁ গ্রামের ভূক্তভোগী লাইফ জানান,পেশায় আমি একজন রাজমিস্ত্রী।আমার বয়স এখন(৩৫) শিখা আমার সম্পর্কে মামী হয়। আমাকে প্রতিবন্ধী সংস্থায় চাকুরী দেওয়ার নামে প্রায় ৭লাখ টাকা নেয়। কয়েক বছর পেরিয়ে গেলেও চাকুরী বিষয়ে জানতে চাইলে শিখা মামী বলেন, ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত চাকুরী হয়। যতদিন চাকুরী হচ্ছে না ততদিন নিজের স্বামীর দেড় বিঘা ধানি জমি খেতে দেয়।
কোলা বাজার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, ঝাড়ঘরিয়া স্কুলের শিক্ষিকা (শিখা) কোলা বাজারে রন্জু মোকসেদ সহ বেশ কয়েকজন ব্যক্তির সাথে সুদের কারবার করেন। এখন প্রশ্ন হলো সে শিক্ষকতার মতো মহান পেশার আড়ালে এসব চালিয়ে যাচ্ছে। তার স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী কি শিক্ষা নেবে এমন শিক্ষকের কাছ থেকে?
কোলা বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মো সুজাউল ইসলাম বলেন, সুদের কারবার বিষয়টি আমি জানি। এ বিষয়ে ব্যবসায়ী মহল কে সচেতন করতে হবে।
কোলা ইউপির চেয়ারম্যান মো শাহিনুর ইসলাম স্বপন বলেন, স্কুল ফাঁকি,সুদ ব্যবসা,চাকরি দেওয়ার নামে অর্থ নেওয়া সহ বিভিন্ন অপকর্মে ঐ শিক্ষিকা লিপ্ত। আমি উপজেলার সকল কর্মকর্তা কে মুঠোফোনে কয়েকদিন আগে জানিয়েছি। কোন এক অদৃশ্য শক্তির জন্য প্রধান শিক্ষিকার ব্যবস্থা হচ্ছে না।
তবে এ বিষয়ে তানজিমা বানু (শিখা)র সাথে মুঠোফোনে কথা বলতে চাইলে তিনি কল রিসিভ করেন নি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো আমিরুল ইসলাম বলেন,স্কুল ফাঁকির অভিযোগ আমরা পেয়েছি। সুদের কারবার, চাকরি দেওয়ার নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আমরা এখনো পাইনি।তবে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাঃ আলপনা ইয়াছমিন বলেন,আমি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি।তারপরও লিখিত অভিযোগ দিলে, ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।