শরীয়তপুরে গণধর্ষণ ও হত্যার দায়ে ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড…..

আছিফুর রহমান রাহুল

জেলা প্রতিনিধি

শরীয়তপুরে এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) শরীয়তপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. সোহেল আহমেদ এ রায় ঘোষণা করেন। এছাড়া প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ড সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন ডামুড্যা উপজেলার দক্ষিণ সুতলকাঠী গ্রামের —নিজাম বালী (৪৫), ওমর ফারুক বেপারী (২৪), মোহাম্মদ আলী (৩৫), আমীন বেপারী (২০) ও ইব্রাহীম মোল্লা (২১)। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

আদালতের নির্দেশে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর বাকি তিন আসামি পলাতক রয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল বিকেলে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় ডামুড্যা উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়নের ভূঁইয়া বাজার এলাকার ৫৫ বছর বয়সী নারী ফিরোজা বেগম। ২১ এপ্রিল বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের একটি ডোবা থেকে তার হাত ও মাথায় ক্ষত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন ওই নারীর ছোট ভাই লাল মিয়া সরদার বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে দুই তিনজনকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে শরীয়তপুর আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন।

আসামিদের মধ্যে পাঁচজন জড়িত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করে পুলিশ। বাকি আসামিদের চার্জশিট থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। পরে ২৮ এপ্রিল ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিজাম বালীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন ওমর ফারুক ও মোহাম্মদ আলীকে গ্রেফতার করা হয়। তারা ওই নারীকে পালাক্রমে ধর্ষণের পর হত্যা করার কথা আদালতের কাছে স্বীকার করেন।

ওই তিনজন আদালতে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। আর অন্য দুই আসামি ইব্রাহিম, আল-আমিন পলাতক আছেন। পরে ওমর ফারুক জামিনে গিয়ে পলাতক। এ ঘটনায় পরবর্তীকালে পুলিশ ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

২২ জনের স্বাক্ষগ্রহণ শেষে আজ দুপুরে শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ হত্যা ও ধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।

নিহত ফিরোজা বেগমের ছেলে চিকিৎসক শাহ জালাল হাওলাদার বলেন, আমরা রায়ে খুশি হয়েছি। সরকারের কাছে দাবি, এই রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়।

শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট সানাল মিয়া বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক হত্যাকাণ্ডের রায়। এই মামলায় পাঁচজন আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ এই রায়ে সন্তুষ্ট।

আসামি পক্ষের আইনজীবী নাসরিন আক্তার বলেন, আমি সম্পূর্ণ অসন্তুষ্ট। আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী রায় হয়নি। প্রথমে যে মামলা হয়েছিল, সেই মামলায় আসামি ছিলো অন্যরা। ষড়যন্ত্র করে এই মামলায় তাদের আসামি করা হয়েছে। আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *