মিজানুর রহমান মিজান:
লালমনিরহাটে চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবার জেলায় ৮৫,৬০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষাবাদ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সরেজমিনে লালমনিরহাট সদর উপজেলার বিভিন্ন ধানক্ষেত ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ ক্ষেতের ধানই পেকে গেছে। অনেকে আবার আগাম লাগানো ধান কাটা-মাড়াই শুরু করেছেন। আগাম ধানের ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে হাসি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,লালমনিরহাটের কৃষকরা উঁচু জমিতে মূলত আগাম ধান লাগিয়েছে। আগাম হাইব্রিড জাতের ধানের ফলন তুলনামুলক কম হয়েছে। সাধারণত এসব অঞ্চলের মাটিতে বছরে ৩-৪ টি ফসল চাষাবাদ করেন কৃষকরা। আমন ধান কাটার পরে এই জমিতে আলু চাষ করা হবে। কিছু জমিতে আগাম আলুর চাষ শুরু হয়েছে।
কৃষকরা জানান, এবার নানান প্রতিকূলতার মধ্যে আমন ধান লাগাতে হয়েছে। সময়মতো বর্ষার পানি না পাওয়া এবং তেলের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছিলেন তারা। এতে খরচ বেশি হয়েছে। তবে ফলন ভালো হওয়ায় আশায় বুক বাঁধছেন কৃষকরা।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার হাড়িভাঙ্গা গ্রামের কৃষক বেলাল হোসেন বলেন, এবার ধান চাষের সময় বৃষ্টির পানি না পাওয়ায় একটু সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। তারপরও ফলন ভালো হয়েছে। ৪ বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ করেছি। প্রায় জমির ধান পেকে গেছে।কিছু মাড়াই করেছি আর বাকি দু-একদিনের মধ্যে ধান কাটা-মাড়াই শুরু করবো।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার আমবাড়ি গ্রামের কৃষক বাদশা মেম্বারের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানায়, ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তিনি বলেন উঁচু জমি গুলোতে খরচ বেশি হয়েছে কারন শেলো মেশিন দিয়ে পানি দিয়ে ধান ফলাতে হয়েছে তবে তেমন লাভ না হলেও ঘর ঘর হবে।
তিনি আরো বলেন, এবার ৩ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি, স্বর্ণা জাতের ধান তুলনামূলক ভালো হয়েছে।
উল্লেখ, আগাম জাতের হাইব্রিড ধান, ধানী গোল্ড, এমজেড, জাতের ধান ১ বিঘা জমিতে সর্বোচ্চ ৩-৪ মণ ধান ফলেছে তবে বেশিরভাগ চিটা হয়েছে। জেলার আগাম জাতের এসব ধান চাষীরা তাদের খরচের টাকা তুলতে পারেনি। এ ব্যাপারে কৃষি কর্মকর্তা হামিদুর রহমান বলেন হয়তোবা তারা যত্ন নিতে পারেনি নতুবা ফুল আসার সময় বাতাস হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. হামিদুর রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে ৮৫ হাজার ৬’শত হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন কৃষকরা। এখন পর্যন্ত ৪০% ধান কর্তন করা হয়েছে। জেলায় প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। জাতীয় ভাবে ৩.০১ টন পার হেক্টর জমিতে চাউল হওয়ার কথা সেখানে ৩.২০ ফলন পেয়েছেন কৃষকরা। তবে ২য় ধাপে যেসব ধান কৃষকরা কর্তন করছে সেগুলো পরিমানে একটু কম হতে পারে।