ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাটাল ডিজিজ রিকভারী ফান্ড ( এফডিআরএফ) থেকে অর্থ বরাদ্দ ও ফান্ডের অর্থ সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনার দাবিতে অনশন কর্মসূচির পরপরই টনক নড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। এ ফান্ডের অর্থ ফেরত পেতে ইউজিসি’র সাথে যোগাযোগ করার জন্য কোষাধ্যক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম।
তিনি জানান, এই ফান্ডটি শিক্ষার্থীদের অর্থেই পরিচালিত হয়। তবে যেসময় ফান্ড গঠন করা হয় তখন আলাদা একাউন্ট না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক হিসাবে মিশে যায়। ফলে পরবর্তী অর্থবছরে এই টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় হিসেবে ইউজিসি’কে দেখানো হয়েছিল। আমার জানা নেই, এই অর্থ ফেরত পাওয়ার কোনো পথ আছে কি-না। তবে আমাদের ট্রেজারার মহোদয় শ্রীঘই ইউজিসি’র সাথে সাক্ষাৎ করবেন। তাকে নির্দেশ দিয়েছি, এই অর্থ ফেরত পাওয়ার কোনো উপায় আছে কি-না, সে বিষয়ে ইউজিসি’র সাথে পরামর্শ করার জন্য।
এদিকে গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অসুস্থ দুই শিক্ষার্থী এই অর্থ বরাদ্দ ও ফান্ডের অর্থের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন। দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে আবেদন করার পরও কোন অর্থ পায়নি বলে অভিযোগ তাদের। এসময় তাদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকয়েক শিক্ষার্থীও অংশগ্রহণ করেন। প্রথমে প্রশাসন ভবনের সামনে ও পরে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ ম্যুরাল চত্বরে অনশনে বসেন তারা। পরে রাত আটটার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের ফোন কলের মাধ্যমে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের আশ্বাস প্রদান করলে অনশন ভাঙে শিক্ষার্থীরা।
বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার সকাল ১১ টার দিকে উপাচার্যের অফিসে ওই দুই রুগ্ন শিক্ষার্থী, ফেটাল ডিজিজ রিকভারি ফাউন্ডেশনের সভাপতি এইচ এম বুলবুল, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদের উপস্থিতিতে জরুরি মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। এসময় শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে সকল ফাইল আগামীকাল যাচাই-বাছাই শেষে জরুরি ভিত্তিতে খুব দ্রুতই আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের টাকা হস্তান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ।
তিনি বলেন, যেহেতু নীতিমালা জটিলতায় এতদিন দেরি হয়েছে। তো নীতিমালা সংশোধনের কাজও করা হবে। তার আগে এই আবেদন কারী শিক্ষার্থীদের সকল ফাইল ঠিক থাকলে অতি দ্রুতই অর্থ বরাদ্দের ব্যবস্থা করা হবে।
উল্লেখ্য, ফ্যাটাল ডিজিজ রিকভারী ফান্ড সম্পূর্ণ শিক্ষার্থীদের টাকায় পরিচালিত দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের সহযোগিতামূলক ফান্ড। ২০১৮ সালে ফান্ডটির অনুমোদনের পর কে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতি বছর ২০০ টাকা করে এই তহবিলে প্রদান করলেও কর্তৃপক্ষের সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকায় প্রায় অর্ধকোটি টাকার হিসেবে গড়মিল দেখা দেয়। পরে আলাদা একাউন্ট খুললেও নীতিমালা জটিলতায় আক্রান্ত আট শিক্ষার্থী গত ছয় মাস ধরে আবেদন করেও অর্থ বরাদ্দ পাচ্ছেন না।