সাদ্দাম উদ্দিন রাজ নরসিংদী জেলা
নরসিংদীর রায়পুরার আদিয়াবাদে চাঁদার দাবীতে নির্মাণাধীন বাউন্ডারি দেয়াল ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী মোঃ আলম মিয়া।
শুক্রবার (২৪ মে) সকালে উপজেলার আদিয়াবাদ ইউনিয়নের উত্তরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আদিয়াবাদ ইউনিয়নের উত্তরপাড়া গ্রামের তাইজ উদ্দিন ৪ ছেলে ও ৩ মেয়ে রেখে মারা যান। গত ২০১৪ সালের ১২ মে মৃত তাইজ উদ্দিনের ওয়ারিশগন আপোষ বন্টন নামা দলিল করেন। যাহার দলিল নং-৫৮৩/১৪। প্রত্যেকেই সমোহারে জমি বুঝে নেন। মোঃ আলম মিয়া প্রাপ্ত ২০ শতাংশ জমি থেকে ১৫ শতাংশ জমি ১২ লাখ টাকায় বড় ভাই মোঃ রফিকুল ইসলাম ওরফে ফালু মিয়ার নিকট সাব-কাবলা বিক্রি করেন। অবশিষ্ট ৫ শতাংশ জায়গায় দেওয়াল নির্মাণ করতে গেলে রফিকুল ইসলামের ছেলে আশরাফুল হক (৩৫) ও ওহাব আলীর ছেলে জুয়েল মিয়া (৪০) আলম মিয়ার নিকট ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় রফিকুল ইসলামের নেতৃত্ব আশরাফুল, জুয়েল সহ অজ্ঞাত আরও ৩/৪ জন রামদা, শাবল, চাপাতি ও লাঠি নিয়ে আলম মিয়ার উপর অতর্কিত হামলা চালান। আলম মিয়ার ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে রাতের আধারে হামলাকারীরা আবার সংঘবদ্ধ হয়ে আলম মিয়ার নির্মাণাধীন দেওয়াল ভেঙে মাটির সাথে গুড়িয়ে দেন। ভুক্তভোগী আলম মিয়া বলেন, আমি আমার পৈত্রিক জমিতে দেয়াল নির্মাণ করছিলাম। আশরাফুল ও জুয়েল আমার নিকট ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন। এবিষয়ে আশরাফুলের বাবাকে জানালে তিনি কোনো পাত্তা না দিয়ে বরং ছেলেকে উস্কে দিয়ে তার (আশরাফুলের বাবা) নেতৃত্বে আমার উপর হামলা করে এবং আমাকে আহত করে। পরে তারা আমার নির্মাণাধীন দেওয়াল ভেঙে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়। পরে আমি নিকটস্থ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। ভুক্তভোগীর ভাই মাওলানা হারিছুল হক বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে কুটি বাজার কেন্দ্রীয় মার্কাস জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে নিয়োজিত আছি। আমরা ৪ ভাই ৩ বোন। আমাদের মধ্যে সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারা হয়ে গেছে। আমার বড়ভাই মোঃ রফিকুল ইসলাম ওরফে ফালু মিয়া ও তার ছেলে দাঙ্গাবাজ প্রকৃতির লোক। অভিযোগকারী আলম আমার ছোট ভাই। বাবা মরে যাওয়ার পর আমার ছোট ভাই আলম মিয়ার ভাগের ২০ শতাংশ জায়গা থেকে ১৫ শতাংশ জায়গা বড়ভাই ফালু মিয়ার নিকট বিক্রি করে দেয়। বাকী ৫ শতাংশ জায়গায় আলম দেওয়াল নির্মাণ করতে গেলে তার ছেলে চাঁদা দাবী করে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তারা দা, চাপাতি ও লাঠি নিয়ে আলমের উপর আক্রমণ করে এবং তাকে বেধড়ক মারধর করে। এর আগেও আমার বড়ভাইয়ের সাথে একই ঘটনা ঘটেছিলো। তিনি আরও বলেন, আমি আমার পৈত্রিক জমিতে বাড়ি নির্মাণ করতে গেলে তিনি ও তার ছেলে বাঁধা দেন। তাদের দাবী আমার জায়গার মধ্যে না-কি তারা জায়গা পাবে। এ নিয়ে তারা আমার সাথে খারাপ আচরণ ও আমাকে মারধর করে রক্তাক্ত জখম করেন। লোক-লজ্জার ভয়ে থানায় কোনো অভিযোগ করিনি। পরে বিষয়টি স্থানীয় লোকজন ও চেয়ারম্যান সমাধান করে দিয়েছিলেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্তরা গা ডাকা দিয়েছেন এবং এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
অভিযুক্ত রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।