মেহেরপুর ভৈরব নদে কচুরিপানা পরিষ্কারে কোটি কোটি টাকা তসরুপ,নেপথ্যে সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন দোদুল।

ফিরোজ রহমান স্টাফ রিপোর্টার:

মেহেরপুরের মৃত প্রায় ভৈরব নদটির মেহেরপুর অংশে ২৯ কিলোমিটার পুন:খনন করা হয়। প্রায় ৭৩ কোটি টাকা ব্যায়ে পুন:খননের কাজ শেষ হয় ২০১৫ সালে। নদে ¯্রােত না থাকায় খননের পর থেকে বিভিন্ন আগাছা জন্মাতে থাকে ভৈরবে। আগাছার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়ে ওঠে কচুরিপানাসহ বিভিন্ন জলজ উদ্ভিধ। ফলে পুন:খননের পরও খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ভৈরবে সৌন্দর্য নষ্ট হয়। পাশাপাশি স্থানীয় জেলেদের মাছ সংগ্রহেও বাধা সৃষ্টি হয়। এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে কুচুরিপানা ও পলি অপসারনের প্রকল্প গ্রহন করে মেহেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড। দুই ধাপে ২৯ কিলোমিটার কচুরিপানা পরিষ্কারে ব্যায় ধরা হয় প্রায় ৬ কোটি টাকা। ১ম ধাপে গাংনীর কাথুলি থেকে সদর উপজেলার রাধাকান্তপুর গ্রামে অর্ধেক অংশ মোট ১৪ কিলোমিটার পলি ও কুচরিপানা অপসারণ করা হয়েছে। এতে ব্যায় দেখানো হয়েছে ৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ পলি ও কচুরিপানা নাম মাত্র অসপসারণ করা হয়েছে। কোন কোন জায়গায় পলি ও কচুরিপানা কিছুই অপসারণ হয়নি। আবার অপসারণের মাস খানেকের মধ্যেই রক্ষনাবেক্ষন না থাকায় আবারও ভৈরবের ভিন্ন জায়গায় কচুরিপানায় ভরে উঠেছে। এভাবে সরকারি কোটি কোটি টাকা তসরুপে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভৈরব পাড়ের অনেকেই। এছাড়াও ভৈরবের মাঝ বরাবর রাধাকান্তপুর ও দারিয়াপুরে দুটি বাধ থাকলেও সেটি অপসারণ হয়নি। এমনকি বড় বড় দুটি বাধর বিষয়ে জানেন না পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানি উন্নয়ন বোর্ডে তথ্য অনুযায়ি চট্টগ্রামের ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি করছেন। কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রীর লোকজন এই কাজের নিয়ন্ত্রন করছেন। মন্ত্রীর আস্থাভাজন ও মেহেরপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিনের নির্দেশে কাজ হয়ছে বলে জানান এলাকাবাসি। সেসময় অনিয়ম হলেও মন্ত্রীর ভয়ে কেও মুখ খুলতে সাহস পাইনি।
বুড়িপোতা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মুকুল বলেন, নয়ছয় করে পলি ও কচুরিপানা অপসারণ করা হয়েছে। সরকারি কোটি কোটি টাকা তসরুপ ও লুট করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
সরদ উপজেলার ভৈরব পাড়ের রাধাকান্তপুর গ্রামের সামসুল ইসলাম বলেন, তেমন কোন কাজই হয়নি। যেনতেন করে পরিষ্কার করে চলে গেছে। কিছু কিছু জায়গায় আদও কিছু করা হয়নি। আমাদের যে উপকার হওয়ার কথা ছিল সেটা পুরোপুরি হচ্ছে না।
খোদা নেওয়াজ নামের আরেকজন বলেন, পরিষ্কার করেও তো কোন লাভ হয়নি। শুধু শুধু টাকা নষ্ট। এক মাসেই তো আগের মত অবস্থা।
এ ব্যাপারে মেহেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-পরিচালক হান্নান প্রধান বলেন, ১ম ধাপের কাজ শেষ হয়েছে। কাজে কোন ফাঁকি নেই। আমাদের কাছে ড্রোন ফুটেজ আছে। তাছাড়া রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে কিছু কিছু জায়গায় কুচরিপানা পুনরাই জন্মাতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *