মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি:
মেহেরপুরের মুজিবনগর সীমান্তে বেড়েছে চোরাকারবারীদের দৌরাত্ম। এক সময় গরু আর মাদক কারবারের মধ্যে চোরাচালান সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন ডলার, স্মার্টফোন এমনকি বিদেশী পাখি পাচারের রুটে পরিণত হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় গেল এক বছরে পাচার বিরোধী অভিযানে যেচিত্র উঠে এসেছে। হাতেগোনা কয়েকজন এ চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করলেও তারা রয়েছে অনেকটাই ধরা ছোয়ার বাইরে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের মাঝপাড়ার সাইফুল ইসলাম ও নতুনপাড়ার আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে মিলেছে বিস্তর অভিযোগ। তারা বেপরোয়াভাবেই করছে চোরাচালান। হন্ডি ও চোরাকারবারি হিসেবে সীমান্ত এলাকায় তাদের নাম যেন ওপেন সিক্রেট।
তবে আশরাফুল ইসলাম অভিযোগ চাপিয়েছেন সাইফুল ইসলামের দিকে।
নিরাপত্তার কারনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, মাঝপাড়ার সাইফুল দৃশ্যমান পেশাগতভাবে পল্লী পশু চিকিৎসক। মোটর সাইকেলে ওষুধের ব্যাগ নিয়ে সারাদিন ঘুরে বেড়ান তিনি। তিনি চিকিৎসা দেন এমন রেকর্ড কমই আছে। পৈত্রিক সম্পদ-সম্পত্তি বলতেও দৃশ্যমান তেমন কিছু চোখে পড়ে না। তাহলে তিনি হঠাৎ তিন বিঘা জমি আর তিনতলা বাড়ির মালিকবনে কিভাবে গেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এলাকার মানুষ।
সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে সীমান্তে গরু পারাপারের অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া এক সময় তিনি বাইরের এক জেলায় ফেনসিডিলসহ ধরা পড়েছিলেন বলে গ্রামের মানুষের জানা আছে।
এত্তসব যারা বিরুদ্ধে সেই সাইফুল ইসলামের সাথে কথা হয়। অভিযোগের বিষয়ে তিনি জানান, তিনি অবৈধ চোরাকারবারি সাথে কোনভাবেই জড়িত নন। তার উপর শত্রুতা করে এ ধরনের অভিযোগ কেউ দিতে পারে। তবে তিনি সার বীজ আনার কথা স্বীকার করে বলেন যে, সীমান্ত এলাকায় বসবাসের কারণে আমরা বিভিন্ন কৃষির মালামাল সার বীজ এক সময় এনেছি। বর্তমান সীমান্তের অবস্থা কড়া হইছে তাই এগুলো আর আনা হয় না। তিনি বলেন, আমি এখন পল্লি পশু চিকিৎসকের কাজ করি।
এদিকে নতুনপাড়ার আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে চোরাচালানের বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, এই আশরাফুলেরও এক সময় তেমন কোন সহায় সম্পদ ছিল না। জমি লিজ নিয়ে এক সময় চাষাবাদ করলেও এখন তিনি সারাদিন মোটরসাইকেলে ঘুরে বেড়ান। সীমান্ত দিয়ে প্রায় প্রতিদিনই কিছু না কিছু পারাপার করে থাকে। একটা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পেশিশক্তির সিন্ডিকেট তৈরী করেছে আশরাফুল ইসলাম। ফলে তার চোরাচালানের বিষয়টি মাঝে মাঝে প্রকাশ্য হলেও এলাকার মানুষ প্রতিবাদ করতে পারেন না।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আশারাফুল ইসলাম বলেন, সীমান্তের কোন অবৈধ কাজের সাথে আমি জড়িত নই। বরং মাঝপাড়ার সাইফুল ইসলাম হচ্ছে এই সমস্ত অবৈধ ব্যবসার সাথে জড়িত। সীমান্তের সব ধরনের চোরাচালান সে পার করে।
সীমান্তের চোরাচালালের বিষয়ে জানতে চাইলে মুজিবনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী রাসেল জানান, আসলে সোনাপুর এলাকার অনেকেই চোরা কারবারীর সাথে জড়িত। আমার অভিয়ান করে কয়েক জনকে আটক করে মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করেছি। যা চলমান প্রক্রিয়া। চোরা কারবারীদের বিরুদ্ধে মুজিবনগর থানা পুলিশের অভিযান চলমান আছে বলেও জানান তিনি।এ বিষয়ে মুজিবনগর বিওপি জানান আমরা আমাদের অভিযান অব্যাহত রেখেছি এবং এই লোকগুলি আমাদের তালিকাভুক্ত চোরাকারবারি।
Show quoted text