মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধ।
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার মধ্য বেজুড়া গ্রামে একটি জমিকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত পাভেল হত্যাকান্ডের জেরধরে প্রতিপক্ষের পুরুষ শূণ্য বাড়ি ঘরে চলছে হামলা ভাংচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের তান্ডবলীলা। আর এতে করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে প্রতিপক্ষরা। শুধু তাই নয়, বাড়ি ঘরে কোন পুরুষ না থাকায় বাড়িতে থাকা নারীদের হেনস্তা করারও অভিযোগ উঠেছে। এমতাবস্থায় প্রতিপক্ষসহ পুরো গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে বিরাজ করছে চরম উদ্বেগ আর উৎকন্ঠা।
জানা গেছে, গত ৩ ফেব্রুয়ারী মধ্য বেজুড়া গ্রামে একটি জমিকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মাঝে মারামারি হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হলেও পাভেল (৩২) নামে এক যুবক আহত অবস্থায় মারা যায়। এ ঘটনায় হামিদ মিয়ার দায়ের করা মামলায় ৬৩ জনকে আসামী করা হয়। এর মধ্যে ১নং আসামি ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ খানসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে ওই মামলায় আটক ১৮ জন জেল হাজতে আছে। প্রতিপক্ষের মারুফ মিয়ার দায়ের করা জিআর ৫৮নং মামলায় গুরুতর অভিযুক্ত ব্যতিত অন্যান্য আসামিরা আদালত থেকে জামিন রয়েছে। যদিও তারা এলাকায় যেতে পারছেন না।
এদিকে, পাভেল হত্যা মামলার আসামী মৃত মহারাজ মিয়ার ছেলে আক্তার হোসেনের বসত ঘরে গত ২৫ ফেব্রুয়ারী দিবাগত মধ্যরাতে পেট্রোল দিয়ে আগুণ ধরিয়ে দেয় প্রতিপক্ষরা। এতে কোন রকম বসত ঘরে ঘুমিয়ে থাকা নারী ও শিশুরা দৌড়ে গিয়ে প্রাণে বাঁচলেও ঘরে থাকা যাবতীয় মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আগুণে পুড়ে ভষ্মিভূত হয়ে যায় ফ্রিজ, টিভি, হাস, মুরগসহ অন্তত ২০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল। যদিও পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌছে আগুণ নিয়ন্ত্রন করে।
এর আগে গত ২০শে ফেব্রুয়ারী রাত সাড়ে ১১টায় পাশ্ববর্তী বুল্লা এলাকায় জেল হাজতে আটক থাকা মাসুদ খানের মালিকানাধীন খাঁন ব্রিকস ফিল্ডে পাভেল হত্যা মামলার বাদী পক্ষের লোকজন দেশিয় ধারলো অস্ত্র নিয়ে আসামি খোঁজার নাম করে হামলা করে। ৩০/৪০ জনের হামলাকারী মোবাইল, নগদ টাকা লুটে নেয়। এসময় ইট ভাটার ম্যানেজারকে জিম্মি করে অফিসের আলমারি তালা ভেঙ্গে নগদ টাকা নেয়, মটর, ডিজেল চালিত মেশিন ও ভাটার শ্রমিকদের কাছ থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। এছাড়াও স্টেক করা কাঁচা ইট ভেঙ্গে দিয়ে সকলকে হুমকি দিয়ে বলে ইট ভাটাটি বন্ধ রাখতে নতুবা পরে এসে শ্রমিকদের জবাই করে ফেলবে। এই ঘটনায় পরদিন থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও তদন্তের নামে এর কোন অগ্রগতি দেখা যায়নি। গত ৫ ফেব্রুয়ারী জগদীশপুর তেমুনিয়ায় মোড়ে মাসুদ খানের ব্যক্তিগত অফিসের তালা ভেঙ্গে ২টি আলমারি ও টেবিলের ডয়ার ভেঙ্গে মূল্যবান কাগজপত্র লুটে নেয় প্রতিপক্ষরা। লুট করা হয় তেমুনিয়ায় বাজারে প্রায় ৮টি দোকান থেকে মালামাল।
এ বিষয়ে মাধবপুর থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ আতিকুর রহমান জানান, একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা শুনে পরিদর্শন করেছি। অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।