আব্দুল্লাহ আনছারী আকরাম
ভালুকা(ময়মনসিংহ)প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার মেদুয়ারী গ্রামের এক পিকআপ চালক কে রাজিব খা (১৯) চুরির অপবাদ দিয়ে বেঁধে মারধর করায় অপমান সইতে না পেরে মঙ্গলবার রাতে ওড়না দিয়ে ফাঁসিতে আত্বহত্যা করেন। ফাঁসি দেয়ার পর রাজিবের পা এবং হাটু মাটিতে লেগে থাকা অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে। নিহতের পরিবার দাবি করছেন তাঁকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় রাজিবে মা রাজিয়া খাতুন বাদি হয়ে ভালুকা মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন। পুলিশ এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানাযায়, গত সোমবার রাত আনুমানিক ৪টার সময় রাজিব বাড়িতে ফির ছিলেন। ভরাডোবা ঘাটাইল সড়কের বাঁকসাতরা মোড়ে পৌঁছলে পাশের মাছের খামারের নৈশ প্রহরিরা চোর চোর বলে চিৎকার শুরু করলে রাজিব ভয়ে দৌড় দেয়।পরে রাজিবকে আটক করে মেদুয়ারী গ্রামের ইসমাইল হোসেন তোহা(৬০),ফরহাদ হোসেন(২৫),সারোয়ার হোসেন (৩০), শারফুল(২৫), আঃ রাজ্জাক(৫০) ও খাইরুল ইসলাম(৩৫)এর নেতৃত্বে পিটুনি দেয় এবং রশি দিয়ে বেঁধে মাটিতে ফেলে রাখে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। এ সময় রাজিবের পরিবারের লোকজনকে খবর দিলে স্থানীয় ইউপি সদস্য আমান উল্লাহ কাছ থেকে মুচলিকা দিয়ে মা তাঁকে ছাড়িয়ে নেন। পর দিন মঙ্গলবার রাতে রাজিব বাড়ি এসে রাতে খাবার খেয়ে শোয়ে পড়েন। সকালে ঘুম থেকে ওঠে রাজিবকে না পেয়ে খোজাখোঁজি করতে গিয়ে দেখা পায় গোয়াল ঘরের আড়ার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁসিতে ঝুলছে। তাঁর পা এবং হাটু মাটিতে লেগে রয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেন। এ ঘটনায় নিহতে মা বাদি হয়ে ৬জনের নাম উল্লেখ করে আত্বহত্যা প্ররোচনায় একটি মামলা করেন।
নিহতের কলেজ পড়ুয়া ছোট বোন নাছিমা আক্তার জানান,আমার ভাই একজন ড্রাইভার সে চুরি করতে যাবে কেন? তাঁর কুয়েতের ভিসা হয়ে গেছিল। কয়েক দিনের মাঝেই তিনি কুয়েত চলে যাওয়ার কথা। আমার ভাইকে ঘুম থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তা না হলে আমার ভাইয়ের পা,হাটু কেন মাটিতে লাগানো থাকবে? আমার ভাইয়ের গায়ে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ছিল। ময়না তদন্তের সময় আঘাতে চিহ্ন পাওয়া গেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আমান উল্লাহ জানান, ভোর রাতে আমাকে ফোন করা হয়েছিল চোর ধরা হয়েছে। আমি এসে দেখি রাজিবকে বেঁধে স্থানীয় মোজাম্মেলের দোকানের বারান্দার মেঝে ফেলে রাখা হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের সামনে থেকে তার মা লিখিত দিয়ে ছাড়িয়ে নেন।
মামলা তদন্ত কর্মকর্তা এস,আই খন্দকার আল রাজী জানান, রাজিবের হাত,পা পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। এখনো পর্যন্ত কোনো আসামি গ্রেফতার হয়নি। আসামি ধরার জন্য চেষ্টা চলছে।