১৫-০৩-২০২৪
পাভেল ইসলাম মিমুল রাজশাহী ব্যুরো
গভীর নলকূপের সক্ষমতা আছে। তাই কৃষকদের জন্য নতুন করে গভীর নলকূপ থেকে জমি পর্যন্ত নালাও সম্প্রসারণ করা হয়েছে। কিন্তু এখন কৃষকদের পানি দেওয়া হচ্ছে না ধান চাষের জন্য। এই কৃষকদের বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায়। দুর্গাপুর পৌরসভার রইপাড়া সরকারপাড়া মাঠে তাদের জমি।
এই মাঠে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গভীর নলকূপ আছে। এর আওতায় ১৫০ বিঘা বোরো ধানের জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব। কিন্তু চাষ হতো ১০০ বিঘার মতো। এরইমধ্যে বেশকিছু জমিতে পুকুর খনন হয়েছে। তাই বোরো ধানের জমি কমেছে। এ অবস্থায় ধানের জমি বাড়াতে সম্প্রতি বিএমডিএ গভীর নলকূপ থেকে মাটির নিচ দিয়ে নালা সম্প্রসারণ করেছে। এখন আরও প্রায় ৫০ বিঘা জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব।
কিন্তু বেঁকে বসেছেন গভীর নলকূপ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আলাউদ্দিন। নতুন জমিতে তিনি সেচ দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। অথচ এবার গভীর নলকূপের পানিতে বোরো ধানের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন এই কৃষকেরা। তারা বোরো ধানের চারাও তৈরি করেছেন। জমিতে লাগাতে কেউ কেউ চারা তুলেও ফেলেছেন। এখন জমিতে পানি পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় ভুক্তভোগী কৃষকদের পক্ষ থেকে বিএমডিএর দুর্গাপুর কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। তারপরও দুইদিনেও বিষয়টির সুরাহা হয়নি। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চাষিরা পানি পাননি।
মাঠের কৃষকেরা জানান,বিএমডিএর গভীর নলকূপ থেকে জমি পর্যন্ত নালা ছিল না বলে এতদিন তারা বোরো ধান চাষ করতে পারতেন না। শাক-সবজি চাষ করতেন দূর থেকে পাইপের মাধ্যমে পানি এনে। এভাবে ধান চাষ সম্ভব নয়। এবার তাদের পানি দেওয়ার কথা বলে নালা সম্প্রসারণ করা হয়। এর জন্য কৃষকেরা ২০ হাজার টাকাও দিয়েছেন। কিন্তু নালার কাজ শেষে এখন গভীর নলকূপের অপারেটর বুদন আলী ও সভাপতি আলাউদ্দিন পানি দিতে চাচ্ছেন না।
মাঠে ১৫ কাঠা জমি আছে কৃষক শাহাদ আলীর। তিনি বলেন,আমার আর অন্য কোথাও কোন জমি নাই। এইটুকুই জমি,সেখানে এতদিন ধান হয়নি পানির অভাবে। শুধু শাক-সবজি করেছি। এখনও পেঁয়াজ আছে। ক’দিনের মধ্যে পেঁয়াজ উঠবে। তারপর ধান করব ভেবেছিলাম। আশা ছিল,এবার কিছুদিন ঘরের ধানের ভাত খাব। কিন্তু এখন তো পানিই দিতে চাচ্ছে না।
এলাকার স্কুলশিক্ষক হাফিজুর রহমানের দুই বিঘা জমি আছে এলাকায়। তিনি বলেন,প্রায় ৫০ জন কৃষকের ৫০ বিঘা জমিকে ধান চাষের আওতায় আনতেই নতুন করে প্রায় ২০০ ফুট নালা সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এখন এই ৫০ বিঘা জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব। কিন্তু কমিটির সভাপতি পানি দিতে চাচ্ছেন না। কেন পানি দেবেন না সেটাও তিনি বলছেন না।
হাফিজুর রহমান বলেন,দুই বিঘা জমিতে ধান করতে আমি নিজেই এবার বীজতলা করে চারা করেছি। সকালে চারা তুলেও নিয়েছি। এখন নালার মুখ ছেড়ে জমিতে পানি দিয়ে কাঁদা করে চারা লাগানোর কথা। এখন পানি দিতে চাচ্ছে না। পানি না দিলে আমার তোলা চারা নষ্ট হয়ে যাবে।
জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে সভাপতি মো. আলাউদ্দিন বলেন,পানি দেওয়া হবে না তা ঠিক না। পানি দেওয়া হবে। এতদিন ডিপ (গভীর নলকূপ) বন্ধ ছিল। আজকেই ডিপ চালু করা হয়েছে। নতুন আরও ৫০ বিঘা জমিতে ধানে পানি দেওয়ার সক্ষমতা এই ডিপের আছে। পানি দেওয়া হবে। কিন্তু কোন কৃষক অভিযোগ করেছে তা আমি জানি না।
বিএমডিএর দুর্গাপুর কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী আজমল হক বলেন,নতুন জমিতে সেচ দেওয়ার জন্যই নালা সম্প্রসারণ করা হয়েছে। কিন্তু ওখানে সভাপতির সঙ্গে কোন কৃষকের হয়তো ব্যক্তিগত বিরোধ আছে। সে জন্য তিনি পানি দেননি। কিন্তু পানি না দিয়ে উপায় নেই। একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি,আমি লোক পাঠিয়ে সমস্যার সমাধান করে দেব।
প্রকাশক ও সম্পাদক খান মো সাইফ উদ দৌলা শাওন কর্তৃক প্রকাশিত।
নির্বাহী সম্পাদকঃ খ ম সাইফুল হাবিব সজিব,
সারা দেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে বিস্তারিত জানতেঃ whatsapp +8801717165415
Copyright © 2024 দৈনিক ভোরের প্রতিধ্বনি. All rights reserved.