মোশাররফ হোসেন, ছাতকঃ
স্বামী,দুই সন্তানসহ সুখেই দিন কাটছিল সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার রংপুর গ্রামের বাসিন্দা কুলসুমার(৩০)।
তবে সেই সুখ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি।
গত ২০ সেপ্টেম্বর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন স্বামী ইয়াসিন মিয়া (৩৫)। পেটে ব্যথার কারণে তার চলাফেরা বন্ধ হয়ে যায়। কাজও করতে পারছিলেন না। পরবর্তীতে কর্মস্থল ঢাকায় একটি একটি মেডিকেলে ভর্তি হন,ভর্তির পর জানতে পারে তার দুটি কিডনি অচল, একমাস হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা করালেও শেষ রক্ষা হয়নি।
গত ১২ অক্টোবর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ইয়াসিন মিয়া এরপর থেকে দুই সন্তান ও বৃদ্ধ শাশুড়ীকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন কুলসুমা।
স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে প্রতিবেশীদের দেওয়া খাবার খেয়ে বেঁচে আছেন কুলসুমা ও তার দুই সন্তান। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? কতদিন প্রতিবেশীদের দেওয়া খাবার খেয়ে বেঁচে থাকবেন, সেই চিন্তায় মুষড়ে পড়েছেন অসহায় এ মা।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া তিন শতাংশ জমিতে স্ত্রী দুই সন্তান ও বৃদ্ধ মাকে নিয়ে বসবাস করতেন দিনমজুর ইয়াসিন মিয়া।
অসুস্থ থাকা অবস্থায় দেনা করে চিকিৎসা করেন এখন দেনা দিতে পারছে না শেষ পর্যন্ত একমাত্র সম্বল বাড়ির বিটে বিক্রি করা ছাড়া উপায় থাকবে না।
দেশ ও বিদেশে অবস্থানরত সবার কাছে মানবিক সাহায্য চেয়েছেন দুই সন্তান শাশুড়ী নিয়ে থাকা অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী কুলসুমা,দুই সন্তান মুসাব্বির (৬) মুজাহিদ (২) ও শাশুড়ীকে নিয়ে অকূল পাথারে পড়ছেন মা কুলসুমা।
কুলসুমা বলেন, ‘বাবা মৃত্যুর পর থেকে ছোট ছেলে মুজাহিদ খুব কান্নাকাটি করছে। দুধের শিশুটি সারাক্ষণ বাবাকে খোঁজে। ছেলেকে দুধ কিনে খাওয়ানোর টাকা নেই। তাই বাধ্য হয়ে তরকারি দিয়ে ভাত ও মুড়ি পানিতে ভিজিয়ে খাওয়াচ্ছি।
তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর প্রতিবেশীদের দেওয়া খাবার খেয়ে বেঁচে আছি। আর কতদিন তারা খাবার দেবে? সামনের দিনগুলো কীভাবে চলবে তা ভেবে হতাশ হয়ে পড়ি। আমার নিজের চিকিৎসা ও সন্তান লালন-পালন নিয়ে খুব চিন্তায় আছি।
স্থানীয় বাসিন্দান আবুল মিয়া বলেন, ইয়াসিন মিয়া দরিদ্র মানুষ।বসতঘর ছাড়া তার কোনো সম্পদ নেই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জমসিদ বলেন, ইয়াসিন অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর তার এখন পরিবারের বেহাল দশা। ব্যক্তিগতভাবে সহায়তার পাশাপাশি তাকে সাহায্যের জন্য বিভিন্ন মহলে জানিয়েছি।