আহসান হাবিব ,ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : ১৭/১০/২৪
অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর দৃঢ় মনোবল নিয়ে প্রতিবন্ধকতা জয় করে এগিয়ে যাচ্ছেন শারীরিক প্রতিবন্ধী মানিক। শারীরিক প্রতিবন্ধীতাকে পাশ কাটিয়ে তিনি ছুঁতে চান চূড়ান্ত সাফল্যের চূড়াকে।ভবিষ্যতে হতে চান কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার । জন্মগতভাবেই তার নিজের দু হাত নেই , দুই পা থাকলেও অস্বাভাবিক চিকন ও ছোট। নিজের পা দিয়েও ভালো করে হাটতে পারে না।অসাধারণ অদম্য ইচ্ছাশক্তি থাকায় সে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে পা দিয়ে লিখে এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে প্রতিবন্ধী মানিক ।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামে ওষুধ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ও প্রভাষক মরিয়ম বেগমের ছেলে প্রতিবন্ধী মানিক ।সে বাবা-মা ও শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় নিজের আত্মবিশ্বাস ও মনোবলকে পুঁজি করে সে পা দিয়ে লিখে জে এস সি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ ও এসএমসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ এবং এ বছর বছর নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর বিজ্ঞান কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়েছেন।
এমনকি পা দিয়ে ল্যাপটপ চালিয়ে নিজের এইচএসসি পরীক্ষা রেজাল্ট দেখেন মানিক । এবারও পরীক্ষার ফল প্রকাশ হওয়ার পর মানিকের জিপিএ-৫ পাওয়ার খবর শুনে সবাই মুগ্ধ।
মানিক বলেন, আমার দুটো হাত না থাকলেও আল্লাহর অশেষ রহমতে এইচএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছি। আমি এর আগে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়েছি । আমি যেন সবার দোয়া ও ভালোবাসায় বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারি এবং ভবিষ্যতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারি।
মানিকের বাবা মিজানুর রহমান ও মা মরিয়ম বেগম জানান, আমার দুই ছেলে । বড় ছেলে মানিক যে শারিরীক প্রতিবন্ধী এটা আমরা মনে করি না। জন্ম থেকেই তার দুটো হাত না থাকলেও ছোট থেকে আমরা তাকে পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করিয়েছি। সমাজে অনেক সুস্থ ও স্বাভাবিক ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে মানিক পিএসসি ও জেএসসি ও এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এটা আমাদের গর্ব। সবাই আমার ছেলেটার জন্য দোয়া করবেন সে যেন সুস্থ সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকতে পারে। সে যেন ভালো কোন প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হয়ে ভাল রেজাল্ট করে তার স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করতে পারে।
সৈয়দপুর বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ মো: আবুল কালাম আজাদ জানান,শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ার পরেও মানিক রহমান আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। তার ভালো ফলাফলের জন্য প্রতিষ্ঠানের সবাই মুগ্ধ। দোয়া করি তার স্বপ্নগুলো যেন পুরণ হয়।