দেলোয়ার হোসাইন মাহদী (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি :
ব্রাহ্মণবাড়িয়াস্থ জামিয়া ইসলামিয়া দারুসসালাম ভাটপাড়া মাদরাসার ২০০১ – ২০২৪ পর্যন্ত মোট ২৪ বছরের ফারেগীন ছাত্রবৃন্দের পুণর্মিলনী উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানটি অত্র মাদরাসার মিলনায়তনে সকাল ৮টা থেকে তিলাওয়াতে কুরআনের মাধ্যমে শুরু হলে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, হা. মাও. ইমরান খাঁন (শাহপরান)। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের একটা স্বপ্ন ছিলো পুণর্মিলনী অনুষ্ঠান করে আমাদের উস্তাদে মুহতারামদেরকে সম্মানিত করবো। এর মাধ্যমে দীর্ঘদিন পর আমাদের পরস্পরের একটা মোলাকাতও হবে। আলহামদুলিল্লাহ দেরিতে হলেও সেটা আজ অক্লান্ত পরিশ্রমের পর সম্ভব হয়েছে। আমরা আমাদের এ বন্ধন মজবুতির সাথে ধরে রেখে অত্র মাদরাসা ও পিতৃতুল্য উস্তাদদের কল্যাণে কাজ করে যাবো ইনশাআল্লাহ।
হা. মুফতি বেলায়েতুল্লাহ বলেন, দীর্ঘ সময় পর আমরা আমাদের পুণর্মিলনী অনুষ্ঠান সফল করতে সক্ষম হয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। এ অনুষ্ঠান করার দ্বারা আমাদের উদ্দেশ্য হলো পুরো দেশে যেনো এটা একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে,যে উস্তাদকে কিভাবে সম্মান করতে হয়। এভাবেই যেনো প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানে সম্মানের বিষয়টা চালু হয়। এবং সবসময় যেন উস্তাদকে স্মরণ করে। কখনো যেন উস্তাদকে ভুলে না যায়। এবং প্রতিষ্ঠানকে যেন স্মরণীয় করে রাখে। ভবিষ্যতে আমরা যেন ৫০ বছর পূর্তি পুণর্মিলনী করতে পারি সেটারও চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
পরিশেষে ছাত্র গড়ার কারিগর, শত শত হাফেজের উস্তাদ, যার জন্য এ আয়োজন করা হয়েছে হা. বেলাল হোসাইন বলেন, আজ তোমাদেরকে এভাবে একত্রে এক প্লাটফর্মে দেখে আমি অনেক আনন্দিত, অনেক উৎফুল্ল। হারানো সন্তানকে ফিরে পেয়ে মা যেমন আনন্দিত হয়, আমি তারচেয়েও বেশি আনন্দিত আজ। সময়ের পালাবদলে যদিও তোমরা বিদায় নিয়ে দেশের দিগন্তে ছড়িয়ে আছো,কিন্তু তোমরা সবসময় আমার মন মস্তিস্কে বসবাস করো। তোমাদের সফলতার কথা শুনলে,জানলে আমি আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাই। তোমাদের আজকের আয়োজন আমাকে খেদমত জীবনের স্বার্থকতা উপলব্ধি করার সুযোগ করে দিয়েছে।
তোমাদের প্রতি আমার আজকের এবিশেষ দিনে একটা নসিহত : তোমরা যে-ই যেখানে থাকো দ্বীনের খেদমতের সঙ্গে নিযুক্ত থাকবে। দ্বীনের খেদমত থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়, এমন কিছুতে যুক্ত হবে না। সবসময় তোমরা উস্তাদদের সাথে যোগাযোগ রাখবে। উস্তাদের দোয়া নিবে। কখনো উস্তাদদের ভুলে যাবে না। আমি সবসময় তোমাদের কল্যাণ কামনা করি। তোমাদের জন্য হৃদয়ের গহীন থেকে দোয়া ও হৃদয় নিংড়ানো মোহাব্বত থাকবে। তোমরা সবসময় উন্নতির দিকে এগিয়ে যাও। এ কামনা করে আজ আমি এখানেই আমার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ করলাম।
উক্ত অনুষ্ঠানে দাওয়াতি মেহমান, ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য বৃন্দ ও ছাত্র সহ অত্র জামিয়ার সকল উস্তাদগণ উপস্থিত ছিলেন। এবং প্রত্যেকেই নিজ নিজ সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে একটা কথাই পুনরাবৃত্তি করেন, মাদ্রাসার প্রতি যেন সবাই নজর রাখে,এবং দ্বীনের খেদমতের সাথে সম্পৃক্ত থাকে। সাথে সাথে উপস্থিত ছাত্রদেরকে পাথেয় তুল্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ দিয়ে অত্র পুণর্মিলনী অনুষ্ঠানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
এসময় প্রায় দেড় শতাধিক ফারেগীন হাফেজদেরকে পাগড়ি ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়েছে। অত্র মাদরাসার সকল উস্তাদদেরকেও হাদিয়া প্রদান করা হয়েছে।
পরিশেষে উস্তাজুল হুফফাজ হা. বেলাল হোসাইন সাহেব কে সকল ছাত্রদের পক্ষ থেকে উমরাহর প্রতিশ্রুতি দিয়ে আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে উক্ত অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়।