নওগাঁ জেলা সহ বিভিন্ন উপজেলায় শীতের ভরা মৌসুমে শোভা পাচ্ছে শীতকালীন সবজি

মোঃ সারোয়ার হোসেন অপু
স্টাফ রিপোর্টার,নওগাঁ।

নওগাঁ জেলাসহ বিভিন্ন উপজেলায় শীতের ভরা মৌসুমে মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে শীতকালীন সবজি
প্রকৃতিতে এখন শীতের আমেজ আর শীতকালকে বলা হয় সবজির ভরা মৌসুম। যখন হরেক রকম শাক-সবজির স্বাদ নেওয়ার সুযোগ মেলে। যদিও শীত আসতে অনেকটা সময় বাকী তবুও এর মধ্যে নওগাঁর মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজি। ফুলকপি, বাঁধাকপি, সিম, বেগুন, মুলা, পালংশাকসহ নানা শাক-সবজিতে ভরে গেছে কৃষকের খেত। ভালো দাম পাওয়ার আশায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খেত পরিচর্যায় ব্যাস্ত কৃষকরা। এদিকে এরমধ্যে বাজারেও উঠতে শুরু করেছে শীতকালীন সবজি। তবে দাম অনেক চড়া।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে- এবছর শীতকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। আগাম শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে। সরজেমিনে নওগাঁ সদর উপজেলার বর্ষাইল, কীর্ত্তিপুর, বক্তারপুর, চক আতিথা, তিলকপুর এলাকার মাঠগুলোতে দিনভর চাষিদের ব্যস্ততা দেখা গেছে। সিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, করলা, বেগুন, মুলা, লাউ, পটল, বরবটি, গাজর, পালং শাক, লাল শাকসহ হরেক রকম আগাম শীতকালীন সবজি চাষ হচ্ছে। কৃষকরা রোদে পুড়ে সবজির খেত পরিচর্যা করছেন। কেউ চারার পরিচর্যা করছেন আবার কেউ সার-বালাইনাশক প্রয়োগ করছেন। এছাড়াও যারা পিছিয়ে পড়েছেন তারা জমি প্রস্তত, বীজ বপণে তোড়জোড় শুরু করেছেন।কৃষকরা বলছেন, আগাম শীতকালীন সবজি চাষে পোকা মাকড়ের আক্রমণ, বৃষ্টিপাতসহ বিভিন্ন ঝুঁকি থাকে। এছাড়াও খরচ হয় বেশি। তারপরও বাজারে ভালো দাম থাকায় লাভ হয় দ্বিগুণ। এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো দাম পাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তারা।কীর্ত্তিপুর গ্রামের আগাম সবজি চাষি নুরুল হক বলেন, ১০ কাঠা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছি। এবছর মাঝখানে বৃষ্টির কারণে চারা কিছুটা নষ্ট হয়েছে। তারপরও যেসব চারা আছে সেগুলোই এখন পরিচর্যা করছি ভালো দাম পাওয়ার আশায়।আরেক কৃষক সাজেদুল ইসলাম বলেন, এ বছর ৩০ শতক জমিতে শিম চাষ করেছি। আগাম শীত মৌসুমের জন্য যেসব সবজি চাষ করা হয় তার দাম ভালোই পাওয়া যায়। কিন্তু পরিচর্যা বেশি করতে হয়। পোকামাকড়ের আক্রমণ বেশি হয়। আবার বৃষ্টি হলে চারা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তারপরও ঝুঁকি নিয়ে ভালো দামের আশায় আগাম সব সবজি চাষ করা হয়।বক্তারপুর গ্রামের সবজি চাষি সিদ্দিক আলী বলেন, দেড় বিঘা জমিতে আগাম সবজি চাষ করেছি। এ বছর বৃষ্টির কারণে আগাম সবজি চাষে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। এজন্য একটু বেশি পরিচর্যা করতে হয়েছে। অনেক খরচ পড়ছে। তবে অসময়ে বাজারে এই সবজির চাহিদা থাকে অনেক। এ কারণে এই সবজিগুলো বাজারে বেশি দামে বিক্রি করা যায়। এ জন্য আগাম শীতকালীন সবজি চাষে আমাদের আগ্রহ বেশি থাকে।নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মেহেদুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির পর থেকে কৃষকরা আগাম শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের সবজির আবাদ শুরু করেছেন। যা এরইমধ্যে বাজারে উঠেছে এবং কৃষকরাও ভালো দাম পাচ্ছেন। আগাম শীতকালীন সবজি চাষে একটু ঝুকি বেশি থাকে। এজন্য কৃষকদের সঠিক সময়ে এবং সঠিক পদ্ধতিতে সুষম সার, জৈব সার এবং কীটনাশকের সঠিক ব্যবহারের জন্য মাঠ পর্যায়ে তাদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *