ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ডিভাইডারের লেন বন্ধ ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পারাপার হচ্ছেন যাত্রীরা।

হাসান আহমেদ স্টাফ রিপোর্টার নারায়নগঞ্জ।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ অংশের ডিভাইডারের লেন বন্ধ করে দেওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে ডিভাইডার টপকে সড়ক পারাপার হচ্ছেন যাত্রীরা। এর ফলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। তবে, এই বিষয়ে উদাসীন হাইওয়ে পুলিশ ও সওজ কর্তৃপক্ষ।

ভুক্তভোগী যাত্রীদের অভিযোগ, এতদিন পারাপারের জন্যে ডিভাইডারের একটি অংশ খোলা থাকলেও গত কয়েকদিন ধরে এটি বন্ধ করে রেখেছে সওজ কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে দূরপাল্লার যানবাহনগুলো সড়কের মধ্যেই তাদের নামিয়ে দেওয়ায় বিকল্প উপায় না পেয়ে উঁচু ডিভাইডারের ওপর দিয়েই পারাপার হতে বাধ্য হচ্ছে।

বুধবার বিকালে মহাসড়কের শিমরাইল মোড়ের সওজ বিভাগের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে এমন দৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

গত কয়েকমাস পূর্বে দূরপাল্লার পরিবহনগুলো সরাসরি ঢাকায় যেতে পারার জন্য চার লেনের ঢাকামুখী সড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের কাঁচপুরব্রিজ থেকে কুয়েতপ্লাজা এলাকা পর্যন্ত উচুঁ ডিভাইডার দিয়ে দুই লেন বিভক্ত করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি আঞ্চলিক যানবাহন চলাচলের জন্য আরও দুটি লেন রাখা হয়। এতোদিন দূরপাল্লার লেন থেকে আঞ্চলিক লেন পরিবর্তনের জন্য সওজ কার্যালয়ের সামনে একটি গেট খোলা রাখা থাকতো। ওইখানে দূরপাল্লার গাড়িগুলো শিমরাইল মোড়ের যাত্রীদের নামিয়ে দিতেন।

তবে, গত তিনদিন যাবত সড়কের ওই অংশটি বন্ধ করে রেখেছেন সহজ কর্তৃপক্ষ। এদিকে দূরপাল্লার গাড়ি এখনো সেই আগের স্থানেই যাত্রী নামিয়ে দিচ্ছেন। গেটটিট আশেপাশে যাত্রী পারাপারের অন্য কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় যাত্রীরা এই উচুঁ ডিভাইডার টপকেই পারাপার হচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পারাপারকালে পুরুষ যাত্রীরা যেকোনোভাবে এটি পার হতে পারলেও নারী যাত্রীদের দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়। এভাবে পার হতে গিয়ে অনেক যাত্রীকেই আঞ্চলিক লেনে চলাচল করা বাসের সামনে পড়ে যেতে হচ্ছে।

ডিভাইডার টপকে পারাপারকালে কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলা হয়। ক্ষিপ্ত মনোভাবে তারা জানিয়েছেন, জনসাধারণের জন্যে সরকার উন্নয়ন করছে। অথচ সওজ কর্তৃপক্ষ একেকসময় একেক সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের হয়রানি করছে। যদি ডিভাইডারের গেট বন্ধই রেখে দেওয়া হয় তাহলে এইসব দূরপাল্লার বাস চালকদের কেনো সার্ভিস লেন দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য করা হচ্ছে না? পূর্বে এখানকার ডিভাইডারের গেট দিয়ে পারাপার হওয়া গেলো এখন তা বন্ধ করে রাখায় আমাদের অনেক দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। তাই অতি শিগগিরই একটি ব্যবস্থা করা হোক।

এদিকে কয়েকজন বাসচালক বলেছেন, আঞ্চলিক পরিবহন চলাচলের জন্য নির্মিত লেনে সবসময় যানজট থাকে। এজন্যই সড়কের ওই লেন দিয়ে তাদের যাতায়াত করা হয় না। এর ফলে যাত্রীও ওইখানে নামানো সম্ভব হয় না। এবং তারা আগে থেকেই এই লেনে চলাচল করে আসছে।

এ বিষয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে শিমরাইল ক্যাম্পের ইনচার্জ একেএম শরফুদ্দিন জানান, ডিভাইডারের বন্ধের বিষয়ে সওজ কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবেন। আমরা তাদের অনুরোধ করেছিলাম গেটটি খুলে রাখার জন্য। আর এভাবে পারাপারের ফলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা এরই মধ্যে বিষয়টি সওজকে জানিয়েছি। তারা বলেছেন বিষয়টির সমাধান করবেন।

জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) এর নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস বলেন, মূলত ওই গেটটি নির্মাণ করা হয়েছিল গুরুত্বপূর্ণ যানবাহন চলাচলের জন্য। কিন্তু পরবর্তীতে এখানে বিভিন্ন দূরপাল্লার যানবাহনের যাত্রী নামানোর ফলে প্রায় সময় দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে। তাই গেটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শিমরাইল মোড়ের পুরো অংশটি বন্ধ করে দেওয়া হবে যেনো সড়কের মধ্যে বাস চালকরা যাত্রী নামাতে না পারেন। আর যাত্রী ওঠানামা করার জন্য এর পাশে দুই লেনের সার্ভিস লেন করা হয়েছে। শিমরাইল মোড়ের যাত্রী নামাতে হলে এই লেন ব্যবহার করতে হবে বাস চালকদের। রাস্তার মধ্যে কোনোভাবেই যাত্রী নামানো যাবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *