“চিঠি দিবসের চিঠি”

স্টাফ রিপোর্টার বাগেরহাট জেলা।।

প্রেমা,
গতকাল সন্ধ্যার পর হতে বৃষ্টির যে নিরবিচ্ছিন্ন পতন ক্রিয়া শুরু হয়েছিল৷ আজ সকালেও তার রেশটা ছিল ভালোমতোই৷ খুলনা থেকে বাগেরহাট আসার পথে থেকে থেকে বৃষ্টির তাড়া খেয়ে জাবুশা চৌরাস্তায় এসেই; শুরু হলো ক্লাস এইটের ইংরেজি শিক্ষকের শেখানো সেই Rain fall Cats & Dogs. বাইকটা কোনোমতে রাস্তার পার্কিং করে; এদিক-সেদিক তাকিয়ে সুযোগ বুঝে ঢুকে পড়লাম পাশের একটি চায়ের দোকানে৷ দোকানে থাকা টিভি স্ক্রিনে তখন স্টার স্পোর্টস চ্যানেলে বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তানের মধ্যকার ২য় টেস্টের খেলা চলছে। সময়ের কৃচ্ছতা সাধন আর সেইসাথে মনের মধ্যে ক্রিকেটের প্রতি তুমুল ভালোবাসা নিহিত থাকায়; উন্মুখ হয়ে দেখছিলাম- মেহেদী মিরাজ আর লিটন দাসের ব্যাটিং শৈলী৷ কিন্তু, আমি কি আর তোমাকে ছাড়া থাকতে পারি?

না, পারি না বলেই; লিটন দাস শতকের মুখে ব্যাট করছে ক্রিজে। আর তুমি এসে বারবার ঢেকে দিচ্ছ তার মুখ৷ কী আশ্চর্য! বুঝতে পারছো? টান-টান উত্তেজনাকর কোনো বিশেষ মুহুর্তেও আনমনে আমার চোখের পর্দায় সারাক্ষণই ভেসে ওঠো তুমি৷ ভালোবাসা বুঝি এমনই হয়, প্রয়োজনীয় পরিধেয় বস্ত্রের ন্যায় সারাক্ষণ সেটাকে জড়িয়ে থাকার মতো যেন প্রেমিকের হৃদয়ের হ্যাঙ্গারে টাঙানো থাকে তার প্রেয়সীর মুখখানি৷ যেখানে আর যে অবস্থায় থাকুক না কেন, হৃদয়ের করিডোর বেয়ে চোখের পর্দায় বারে বারে সে মুখ উঁকি দিয়ে যাবেই৷

হ্যাঁ, আমি জানি-
তুমি আমার উল্টো জগৎ, অজেয় রথ
তোমার নিবাস আমার হতে অজস্র পথ,
অজস্র পথ!

আমি তবু তোমাকে দেখতে পাই জানো? সারাক্ষণ তোমাকে দেখি আমি৷ বুঝলে না, তাইতো? ঐ যে সুনীল বাবু বলেছিলেন- তোমাকে যখন দেখি, তার চেয়ে আরো বেশি দেখি, যখন তোমাকে দেখি না আমি।
চোখের সামনে থাকলে তো সে রয়েই গেল,
আর চলে যাওয়া মানে তো সেই সারাক্ষণই
তার থেকে যাওয়ার আমেজ থাকা৷

প্রেমা, একটা কথা বলে রাখি-
আমি উদাস দুপুর, বিজন রাত্রি,
ক্ষয়িষ্ণু সন্ধ্যা, সকাল-বিকাল,
অষ্টপ্রহর তোমার সাথেই জড়িয়ে থাকি৷
কীভাবে জানো?
ছিল না নদী, তবুও নদী তোমার তরেই
পেরিয়ে আসা, তুমি ছিলে না, তবুও যেন
তোমার কাছেই বেড়াতে আসা…

হ্যাঁ, এটাই সার্বক্ষণিক ভালোবাসা।

ইতি-
প্রীতম৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *