ইবি প্রতিনিধি:
ক্যাম্পাসকে সবুজায়নের লক্ষ্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্স ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসেন সজীবের গৃহীত 'প্রজেক্ট ১৭৫' এর উদ্বোধন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন একাডেমিক ভবনের পাশে বৃক্ষরোপন করার মধ্য দিয়ে প্রজেক্টটির উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ, প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা, অর্থনীতি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী মোস্তফা আরিফ, একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারহা তানজিম তিতিল,সহকারী অধ্যাপক শাহেদ আহমেদ
সহকারী অধ্যাপক হুমায়ুন কবির, সহকারী অধ্যাপক ড. আরিফুল ইসলামসহ বিভাগের শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনকালে উপাচার্য এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন। এছাড়া এমন কাজগুলো চালিয়ে যাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করেন তিনি।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, প্রজেক্ট ১৭৫ এর আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭৫ একর জায়গাজুড়ে দ্রুততম সময়ে ফলন দেয়া ১৭৫টি উন্নত জাতের ফলগাছ রোপণ করা হচ্ছে। ২০১৯ সালে ১ম বর্ষের শেষের দিকে সজীব শুরু করেন প্রজেক্টের কাজ। নানা বাঁধা বিপত্তি অতিক্রম করে দীর্ঘ চার বছরের পরিশ্রম আর সাধনায় বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে তার 'প্রজেক্ট ১৭৫'। গ্রাফটিংয়ে বিশেষ দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে তার আবাসিক হলের (শেখ রাসেল হল) পিছনের খালি জায়গায় বিভিন্ন ফলের বাছাইকৃত জাত থেকে সৃষ্টি করেন উন্নতজাতের দ্রুত ফলনশীল চারা। এর জন্য প্রথমে বিভিন্ন ফলের বীজ সংগ্রহ করে তার থেকে চারা করতেন। চারাগুলো গ্রাফটিংয়ের উপযুক্ত হলে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বাছাই করা উন্নতজাতের গাছের সায়ন সংগ্রহ করে ক্যাম্পাসে এনে গ্রাফটিং করতেন। যেখানেই ভালো জাতের প্রজাতি পেতেন তা সংগ্রহ করতেন। এমনকি কুরিয়ারের মাধ্যমেও বিভিন্ন জায়গা থেকে সায়ন সংগ্রহ করেছেন সজীব।
প্রজেক্ট ১৭৫ এ রয়েছে ১২ থেকে ১৩ টি জাতের উন্নত প্রজাতির আমের চারা। এগুলোর মধ্যে এমন জাতও রয়েছে যেগুলোর এক একটি আমের ওজন হবে ৫ থেকে ৬ কেজি। এছাড়া গ্রাফটিংয়ের মাধ্যমে এক গাছে দুই থেকে তিন জাতের আম পাওয়া যাবে এমন গাছও তৈরি করেছেন তিনি। বেলের মধ্যে যেটার সবচেয়ে বেশি মিষ্টতা পেয়েছেন তার ৪০টার মতো চারা রয়েছে তার সংগ্রহে। তার সংগ্রহের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় গাছটি হলো লাল তেঁতুল। বাংলাদেশে এই গাছটি দুষ্প্রাপ্য বলেও জানান সজীব। এছাড়া তার গ্রামের বাড়ী সাতক্ষীরার ভালো মানের কাঁঠালের চারাসহ সর্বমোট ১৮০ টির মতো চারা রয়েছে তার এই প্রজেক্টে। সর্বশেষ আজ তিনটি চারা রোপনের মধ্য দিয়ে প্রজেক্টটির উদ্বোধন করা হয়েছে। এবং সবগুলো গাছ প্রশাসনের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে আনোয়ার হোসেন সজীব বলেন, 'আজ প্রজেক্ট ১৭৫ এর গাছ আমি প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেছি এবং ভিসি স্যার প্রজেক্ট ১৭৫ এর উদ্বোধন করেছেন। আমি চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই গাছগুলো সঠিকভাবে পরিচর্যা এবং সংরক্ষণ করুক। এগুলো আমার জন্য একটা স্মৃতি হয়ে থাকবে, যখন আমি পরবর্তীতে ক্যাম্পাসে আসবো। তখন এই গাছগুলো দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতিগুলো আমার মনে পড়বে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আসলে প্রত্যেক শিক্ষার্থীরই দাবি থাকে যে সবুজ ক্যাম্পাসে পড়াশোনা করা। তবে বাস্তবতা হচ্ছে হল কিংবা কনস্ট্রাকশনের কাজে প্রতি বছরই কিছু গাছ কাটা পড়ে। আমার চিন্তাভাবনা ছিলো ক্যাম্পাসের সবুজায়নে আমার ছোট একটা কনট্রিভিউশন হলেও থাকবে। সেই চিন্তা থেকেই এই প্রজেক্টের কাজ শুরু করি। এক্ষেত্রে আমি ফলগাছকে বেছে নিয়েছি যাতে সবুজায়নের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা এগুলো থেকে ফল খেতে পারে।'
প্রকাশক ও সম্পাদক খান মো সাইফ উদ দৌলা শাওন কর্তৃক প্রকাশিত।
নির্বাহী সম্পাদকঃ খ ম সাইফুল হাবিব সজিব,
সারা দেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে বিস্তারিত জানতেঃ whatsapp +8801717165415
Copyright © 2024 দৈনিক ভোরের প্রতিধ্বনি. All rights reserved.