শুরু টা হয়েছিল ২০১৪ সালের শেষ এর দিক। ভিডিও বানাবো বন্ধুরা মিলে। তারপর ইউটিউবে আপলোড দিব এই রকমটা ছিল প্ল্যানিং। তারপর ২০১৫ এর শুরুর দিক মাল্টি ট্যালেন্টেড ক্লাব নাম দিয়ে একটা ইউটিউব চ্যানেল খুলে ফেললাম, সালমান মুক্তাদির আর আসিফ বিন আজাদ কে অনুপ্রেরণায় নিয়ে শুরু করে দিলাম। প্রথম প্রথম বন্ধুরা মিলে যা মনে আসতো আবোল তাবোল বানিয়ে এডিটিং পারতাম না বলে। এডিট না করেই ওই আবোল তাবোল ভিডিও গুলো ছাড়তাম। হাতে গোনা ৮০/১১০ জন পরিচিত ভাই-ব্রাদারা দেখতো, এতো টুকুর মধ্যে মহা খুশি হয়ে যেতাম। তারপর সবাই বুঝাতে শুরু করলো একটু এডিট করে ভিডিও আপ দিলে আরো মানুষ দেখবে। তাই রুমন হোসেন নাম এর এক বড় ভাই ছিল যিনি এডিটিং টুল সম্পর্কে পারদর্শী ছিলেন। তার থেকে এডিটিং সফটওয়্যার কালেক্ট করি। তারপর থেকে ইউটিউবে এডিটিং এর কিছু টিউটোরিয়াল দেখে দেখে ৭ দিনে এডিটিং শিখলাম। তারপর কনটেন্ট তৈরী করে আপ দেওয়াটা আস্তে আস্তে নেশায় পরিণত হলো। খুব ভালো প্রশংসা অর্জন করলাম। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব, ভাই-ব্রাদার থেকে। ইউটিউবে দেখতে দেখতে ১,৮০০ প্লাস সাবস্ক্রাইব ও হয়ে গেল। ইউটিউব থেকে প্রথম ইনকামও পেলাম ৮,০০০ টাকা এর বেশি। তারপর পারিবারিক কিছু প্রয়োজনে ইউটিউব চ্যানেল ডিলিট করে ২০১৭ তে দেশের বাহিরে চলে যাই। তারপর ২০১৯ সালে দেশে ফিরে দায়িত্ব বোধ থেকে জব জয়েন করলাম। কিন্তু দিন শেষে মনের শান্তি পাচ্ছিলাম না, যেমন কন্টেন্ট ক্রিয়েশন, সোশ্যাল ওয়ার্ক, কারিকুলাম এক্টিভেটিস করে পেতাম। সারা দিন পর ডিউটি শেষে বাসায় ফেরার পথে ভাবাতাম, জীবনে কি করতে চেয়েছিলাম? আর কি করছি?কি হতে চাই? আর কি হতে যাচ্ছি? আমার জীবনটা যেন ফ্রাসস্টেশনে ভড়া!
তারপর হঠাৎ একদিন লকডাউন এর সময় বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিচ্ছিলাম।
আমার ফ্রেন্ড বান্টি ঘোষ মজার ছলে মোবাইল এর স্ন্যাপ চ্যাট এর বেবি ফিল্টার দিয়ে একটি ছবি তুলে দিয়েছিল আমার। ওই ছবি হঠাৎ কি মনে হলো মাই ডে তে দিলাম। তারপর হঠাৎ ই ১২ ঘন্টা পর দেখলাম ওই ছবিটাতে স্বাভাবিক আর ১০টা ছবির তুলনায় অনেক বেশি রিঅ্যাকশন আর ভিউস আসলো।
তারপর আর কি ০৩-১০-২০২০ সাল থেকে শুরু করে ফেললাম ছোট কিরণ নাম দিয়ে একটা ফেসবুক পেইজ।
যাত্রা শুরু হলো ছোট কিরণ পেইজ এর। তারপর বন্ধু দের সাহায্য নিয়ে কাজ করছিলাম। একটা সময় বন্ধুরাও সংঘ ছেড়ে দিল হোক সেটা তাদের নিজস্ব স্বার্থ শেষ বলে বা আমাকে দিয়ে তাদের দরকার শেষ বলে।
তারপরও আমি কিরণ থেমে থাকিনি। একের পর এক কন্টেন্ট তৈরী করে আপলোড করে গেছি।
অনেকেই বলেছে ছেলে বড় হয়েছে কাজে মনোযোগ দেবে তা না করে কি সব ফেসবুকে আপলোড দেয়!!! কাজে মনোযোগ দাও কিরণ এগুলো করে লাভ নাই, যেমন ভাব নিচ্ছো মনে হয় শাহরুখ খান এর সাথে ভিডিও বানাতে যাচ্ছো। আজ যতটুকু অর্জন করছি। ছোট কিরণ এর যত অর্জন আছে। এখন সে মানুষ গুলাই বলে কিরণ তোমারে ভিডিওতে একটু আমাকে নিও, কিরণ তোমার পরের ভিডিওটা আমার ছেলেকে নিও, ও তোমার ভিডিও দেখে।
ছোটো কিরণের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যারা আছে। তারা এখনো কন্টিনিউয়াস সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে যেমনঃ বাবা, মা, বড়দি এমন কি আমার ছোট ভাই নিবির ঘোষ। সে নিজেও ভিডিও মেক করে তার জুনিয়র ডেডি নামক ফেসবুক পেইজে তারপর দিপু দাদা, আদনান ভাই, সৈকত মামা আর কাওসার ভাই।
আর বন্ধুদের মধ্যে রয়েছে
আনন্যা, লাবণ্য, মাসনুর, শান্ত, শানু আর তন্ময়।
স্বপ্ন বলুন বা ইচ্ছা, আমি চাই আমার বাবা-মাকে একটি সুন্দর পরিবেশে ফ্ল্যাট কিনে দিতে আর তাদের কে বাহিরে ঘুড়ার জন্য একটি যেগুয়ার ব্রান্ডের গাড়ি কিনে দিতে। আজ না হোক কাল যে দিন পুরণ হবে এই চাওয়া পাওয়া গুলো, সে বুঝে নেবো জীবনে সফলতা অর্জন করতে পেরেছি।
চাকুরী এবং কন্টেন্ট ক্রিয়েশন দুটো একসাথে অনেক চাপ হয়ে যায় তারপরও যখন ভাবি আজ ছোট কিরণ ০ থেকে ১,৫০০ প্লাস মানুষের বিনোদন পাওয়ার জায়গা। তখন আমাকে এই ভাবনা গুলোই শত কষ্টের মাঝেও নতুন কন্টেন্ট তৈরী করতে শক্তি যোগায়।
এই সকল মানুষ গুলোকে আমার প্রাণঢালা ভালোবাসা।
দিনশেষে এতোটুকু বলতে চাই যতদিন বেঁচে আছি সকলকে বিনোদন দিয়ে যেতে চাই ভিডিও ক্রিয়েশনের মাধ্যমে।