মেহেরপুর জেলা (সদর) প্রতিনিধি: মো:আসাদুজ্জামান খান:
সনাতন ধর্মাবলম্বী বা হিন্দু ধর্মাবলম্বীরদের সর্ব বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব “শারদীয়া দূর্গাপূজা”। মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হতে এখনও ১৭ দিন বাকী থাকলেও, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দরজায় কড়া নাড়ছে দেবী-দুর্গার আগমনী বার্তা। ইতোমধ্যেই মেহেরপুর (সদর) জেলায় প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
বিশেষ করে দুর্গা প্রতিমা তৈরির কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন। মণ্ডপের সাজসজ্জাসহ সার্বিক প্রস্তুতি দ্রুত এগিয়ে নিচ্ছেন আয়োজক ও পূজা উদযাপন কমিটি।
আগামী ২০ অক্টোবর থেকে শুরু হবে পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। সদর উপজেলায় এবছরে ৮ টি মণ্ডপে দুর্গা প্রতিমা বসবে। তারই সাজসজ্জায় ব্যস্ত আয়োজকরা। শারদীয় উৎসব সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পূজা উদযাপন সম্মেলন কমিটির নেতারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,কারিগররা কাদা-মাটি, খড়-কাঠ সংগ্রহ করে, আনুসাঙ্গিক যা প্রয়োজন সংগ্রহ করে, প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। সকাল থেকে রাত অবধি চলছে এই কার্যক্রম। এখন শারদীয় দুর্গোৎসবে মেতে ওঠার অপেক্ষায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। এ উৎসবকে ঘিরে সদর উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের মাঝে দেখা দিয়েছে কর্ম ব্যস্ততা। দিন রাত কাজ করে শিল্পীদের হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। যেন দম ফেলার সময় নেই কারিগরদের। তবে রং, তুলির ও সাজসজ্জার দাম বেশি হওয়ায় ও প্রতিমা বানানোর মজুরি কম পাওয়ায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে তাদের মধ্যে।
প্রতিমা শিল্পী শ্রী হরি গৌস্বামী বলেন,আমি ২৬ বছর যাবত প্রতিমা বানায়। দুর্গা প্রতিমা ছাড়াও সকল ধরনের প্রতিমা বানিয়ে থাকি এইবার আমি তিনটি প্রতিমার কাজ করিতেছি কন্টাক্টে, আমার সাথে তিন জন হেলপার আছে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা পূজা উদযাপন সম্মেলন কমিটির আহ্বায়ক শ্রী সন্দীপ কুমার বাপ্পি পাল বলেন, এবার অনেক বড় করে পূজা করা হচ্ছে। মহাভারতের কিছু দৃশ্য রাখা হচ্ছে। সব মিলিয়ে মেহেরপুর সদর উপজেলায় মোট ৮ টি প্রতিমা তৈরি হচ্ছে।
সদর উপজেলা পূজা উদযাপন সম্মেলন কমিটির সদস্য সচিব শ্রী অশোক ঘোষ জানান, এ বছর অনেক সাড়ম্বরে পূজা উদযাপন করা হবে। মূর্তি তৈরির কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। কিছুদিন পর থেকেই রংয়ের কাজ শুরু হবে। দশভূজা দেবী দুর্গা এবার আসছেন ঘোড়ায় চড়ে, আর ফিরে যাবেন নৌকায় করে। পূজাকে কেন্দ্র করে তাই সর্বত্রই চলছে সাজ সাজ রব।
সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মো:সাইফুল ইসলাম, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে, পুজায় আগত দর্শনার্থীদের ভিড় এড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ, পুলিশের টহল জোরদার করা, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে অনুরোধ, সহ ইভটিজিং ও নারীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা প্রদানে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ।
এবিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, প্রতিমা তৈরির স্থানসমুহ এবং পূজা মন্ডপ গুলোতে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সে লক্ষ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্যের সাথে সুষ্ঠুভাবে যেন পূজা উদযাপিত হয় সে লক্ষে জনপ্রতিনিধি সহ সর্বসাধারণের সহযোগিতা কামনা করছি।