রিংকু রায় (নেত্রকোণা) মোহনগঞ্জ :
নেত্রকোণার মোহনগঞ্জে শনিবার মোহনগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মোহনগঞ্জের গর্বিত সন্তান ওবায়দুল হাসান প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হওয়ায় নাগরিক সংবর্ধনার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, যিনি প্রধান বিচারপতি হন তিনি জীবনে চারবার শপথ গ্রহণ করেন। হাইকোর্ট বিভাগ থেকে যিনি বিচারপতি হন তিনি দুইবার এবং আপীল বিভাগ থেকে যিনি বিচারপতি হন তিনি তিনবার শপথ নেন। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ২০০৯ সালে বিচারপতি হিসেবে গ্রহণের পর থেকে আজ পর্যন্ত আমি আমার শপথ থেকে কখনো বিচ্যুত হইনি। এটাই হচ্ছে বিচারকের প্রথম কর্তব্য এবং একমাত্র দায়িত্ব। প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, সংবিধানের ব্যবস্থা অনুযায়ী রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ রয়েছে। একটি হচ্ছে নির্বাহী বিভাগ, একটি হচ্ছে আইন বিভাগ, আরেকটি হচ্ছে বিচার বিভাগ। নির্বাহী বিভাগের প্রধান হচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আইন বিভাগের প্রধান হচ্ছেন মাননীয় স্পিকার এবং বিচার বিভাগের প্রধান হচ্ছেন মাননীয় প্রধান বিচারপতি। এই তিনটি বিভাগ রাষ্ট্রের তিনটি পায়া। আর ওই তিনটি পায়ার উপর দাঁড়িয়ে আছে রাষ্ট্র। তিনটি অঙ্গের একটি খারাপ হলে রাষ্ট্র ভালোভাবে চলতে পারে না। সেইজন্য তিনটি অঙ্গের কর্ণধার যাঁরা হবেন তাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব অনেক বেশি। তিনি আরো বলেন, সমাজে বিভিন্ন রকমের রাজনীতি আছে, আন্দোলন আছে, সংগ্রাম আছে, এগুলো থাকবে। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এগুলো সবসময় হয়ে থাকে। আপনারা একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বক্তব্যে নেত্রকোণা- ৪ আসনের সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসান বলেন, আজ মোহনগঞ্জবাসীর ও আমার পরিবারের জন্য আনন্দের দিন। নেত্রকোণার বরেণ্য ব্যক্তিদের তালিকায় একজন কৃত্বি সন্তান ওবায়দুল হাসানের নাম যুক্ত হলো। যিনি বাংলাদেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি এবং আমার বড় ভাই। নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক কমিটির আহবায়ক ও পৌর মেয়র লতিফুর রহমান রতন। আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ইউপি চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন চৌধুরীর সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নেত্রকোণা জেলা ও দায়রা জজ শাহজাহান কবীর, জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ, পুলিশ সুপার মোঃ ফয়েজ আহমেদ, জেলা জর্জ কোর্টের জিপি বীর মুক্তিযোদ্ধা এড্ভোকেট আমিরুল ইসলাম, এড্ভোকেট শামসুর রহমান লিটন প্রমুখ। অনুষ্ঠান মঞ্চে হাইকোর্ট বিভাগের রেজিষ্টার মশিউর রহমান এবং আপীল বিভাগের রেজিষ্টার সাইফুল রহমান উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ফুলের তোড়া ও ক্রেস্ট দিয়ে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে বরণ করেন আয়োজক কমিটির পক্ষে আহবায়ক ও পৌরসভার মেয়র লতিফুর রহমান রতন। অনুষ্ঠানে মানপত্র পাঠ করেন তাহমিনা ছাত্তার।