বান্দরবানে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মহাপিন্ড দানের মাধ্যমে শেষ হলো কঠিন চীবর দানোৎসব

বান্দরবান প্রতিনিধি।।

বান্দরবানে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মহাপিন্ড দানের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে মাস ব্যাপী কঠিন চীবর দানোৎসব। ২নভেম্বর মঙ্গলবার সকালে উৎসবের শেষদিনে কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহার থেকে পাঁচ শতাধিক বৌদ্ধ ভিক্ষু খালি পায়ে প্রাত ভ্রমণ করে সারিবদ্ধভাবে মহাপিন্ড গ্রহণে জন্য বের হন। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বান্দরবান শহরের মধ্যম পাড়া, উজানী পাড়া ঘুরে বৌদ্ধ ধর্মালম্বী নারী-পুরুষের কাছ থেকে ছোয়াইং ও পিন্ডদান গ্রহণ করেন। দীর্ঘ দুই কিলোমিটার পথ পর্যন্ত পাহাড়ি বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা প্যান্ডেল টাঙ্গিয়ে রাস্তার দুপাশে সারিবদ্ধভাবে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ছোয়াইং, চাল, নগদ টাকা, চীবর, মোমবাতিসহ উৎসবের নানা সামগ্রী ধর্মীয় গুরুদের দান করেন। পুণ্য লাভের আশায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা ভিক্ষুদের পিন্ডদানের পাশাপাশি নানা প্রকার মিষ্টান্ন খাবারও দান করেন। এ ছাড়া বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সামনে থাকা বৌদ্ধ মূর্তিকে পূজাও দেওয়া হয়।

এসময় পিন্ডদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা, মন্ত্রীর সহধর্মিণী মেহ্লাপ্রু মারমা।

এসময় আরো দর্শক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ সামসুল ইসলাম,বান্দরবান প্রেসক্লাব সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাচ্চু,সাধারণ সম্পাদক মিনারুল হক।
প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা জানায়, আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাসে (উপবাস) থাকার পর ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় দায়ক-দায়িকারা বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সম্মানে বান্দরবানের বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব পালন করেন। এই উৎসবে পাহাড়িরা চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে নতুন তুলা থেকে চর্কার মাধ্যমে সুতা তৈরি করে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধানের জন্য চীবর বুনে ভিক্ষুদের মাঝে চীবর দান করেন। কোনো প্রকার সেলাই ছাড়া তৈরি চীবর বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বিতরণ করা হয় এ উৎসবে। প্রায় দুই হাজার বছর আগে গৌতম বুদ্ধের মহা পুণ্যবতী নারী বিশাখা দেবী এই কঠিন ব্রত পালন করে বুদ্ধকে চীবর দান করেছিলেন। সেই থেকে প্রতিবছর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা মাসব্যাপী কঠিন চীবর দানোৎসব পালন করে আসছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *