//বরিশাল জেলা প্রতিনিধি মোহাম্মদ জাকির হোসেন//
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম সেন্টু ও তার ছোট ভাই সুমন হাওলাদারের বিরুদ্ধে অসচ্ছল প্রতিবন্ধীদের ও গরীবদের ভিজিডি ভাতার কার্ড করে দেয়ার নামে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়নের ভুক্তভোগী বাকেরগঞ্জ থানা একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। থানা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়নের পূর্ব মহেশপুর গ্রামের আব্দুস ছালাম মোল্লার স্ত্রী বেবী আক্তারের কাছ থেকে ১৫০০/- টাকা নিয়ে ভূয়া প্রতিবন্ধী কার্ড প্রদান করায় পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়নের মৃত সোহরাব আলীর পুত্র মো: সুমন হাওলাদার ও তার বড় ভাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: জহিরুল ইসলাম সেন্টুসহ বারেক মোল্লার স্ত্রী কিরন বালা তিন জনকে বিবাদী করে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী বেবী বেগম।২৪ আগস্ট ( বৃহস্পতিবার) এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বেবী বেগমের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমার প্রতিবন্ধী ছেলে খায়রুল ইসলামকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেয়ার জন্য পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়নে মৃত্যু সোহরাফ আলী হাওলাদারের পুত্র সুমন হাওলাদারকে আমি ৬ মাস আগে প্রতিবেশী বারেক মোল্লার স্ত্রী কিরন মালার মধ্যমে ১৫০০/- টাকা দেই। এরপর সুমন বিভিন্ন রকম তালবাহানা করতে থাকে। সুমনকে আমি বারবার ফোন দিলে সুমন তার বড় ভাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম সেন্টুর দোহাই দিয়ে বলেন আমাকে বারবার ফোন দেয়ার দরকার নেই আমার বড় ভাই একজন আওয়ামী লীগের বড় নেতা সে অল্প সময়ের মধ্যেই কার্ড করে দিবেন। কিছু দিন পরে প্রতিবেশী কিরন মালা আমাকে খবর দেয় সুমনের দোকান থেকে আমার ছেলের প্রতিবন্ধী কার্ড আনার জন্য। আমি দোকানে যাওয়ার সময় না পেলে কিরন মালা আমার ছেলের প্রতিবন্ধী কার্ড আমার বাড়ি এসে দিয়ে যায়। আমি ঐ কার্ড নিয়ে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে গেলে তারা ওই কার্ডটি জাল বলে জানায়। পরবর্তীতে আমি সুমন হাওলাদার ও কিরন বালার সাথে যোগাযোগ করলে আমাকে প্রান নাশ ও মিথ্যা মামলা দেয়ার হুমকি দিয়ে আসছে। আমি এখন জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বাকেরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট অপরাধিদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানায় তিনি।সরেজমিনে গেলে কথা হয় পূর্ব মহেশপুর গ্রামের ভুক্তভোগী – মৃত. রুস্তুম মোল্লার স্ত্রী হাসিনা বেগমের সাথে তিনি জানান, ভিজিডি কার্ডের জন্য ৩১০০/- টাকা সুমন হাওলাদারকে দিয়েছি প্রতিবেশী কিরন বালার মাধ্যমে। একই অভিযোগ সালাম মোল্লার স্ত্রী বেবী বেগমের তার থেকেও প্রতিবন্ধী কার্ডের জন্য ১৫০০/- টাকা নিয়েছে। এছাড়াও রুহুল আমিন সিকদারের স্ত্রী সাহিনুর বেগম এর থেকে, ভিজিডি কার্ডের জন্য ৩১৫০/- টাকা ও মশিউর হাওলাদারের স্ত্রী জাকিয়া বেগমের কাছ থেকে, ভিজিডি কার্ডের জন্য ৩০০০/- টাকা নিয়েছে ওই চক্র। তারা আরো জানান, এই ইউনিয়নে অনেকের থেকে তারা টাকা নিয়েছেন কার্ড করে দেয়ার নামে। পাদ্রীশিবপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান বাবু জানান, অপরাধি যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হোক। অসহায় প্রতিবন্ধীদের ভাতার কার্ড করে দেয়ার নামে টাকা আত্মসাৎ এটা একটা গুরুতর অপরাধ করেছেন তার।বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম মাকসুদুর রহমান জানান, আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সব কিছুর ঊর্ধ্বে থেকে পুলিশ বিষয়টি তদন্তপূর্বক অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কোনো তদবিরে কাজ হবে না।অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম সেন্টু বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আমার ছোট ভাই সুমনের সাথে কথা বলে দেখি। এদিকে সাংবাদের ভিত্তিতে জাতীয় মানব সেবা সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ জাকির হোসেন তিনি বিষয়টি নেককারজনক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং উপজেলার দায়িত্বশীল সমাজ সেবা কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তদন্ত করার জন্য জোর দাবি ও সুপারিশ করেন।
এ ব্যাপারে বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজল চন্দ্রশীল বলেন, যেহেতু তারা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যও নয় হয়তো প্রতারক চক্র। বিষয়টি থানা পুলিশের কাছে ভুক্তভুগী অসহায় এমন নিত্যান্ত দরিদ্র বেবি বেগমকে বাদী করে মোট তিনজনকে বিবেদী করে দেয়া হয়েছে বাকের থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করায় বাকেরগঞ্জ থানার ওসি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, আমরা সবাই মাত্র অভিযোগ পেয়েছি তবে এ বিষয়ে জমিনের তদন্তে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেলে আসামিজ যতই পড়বো শালী হোক না কেন, আমরা তাহার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে বদ্ধপরিকর।