মোঃ সুমন প্রাং
বগুড়া জেলা প্রতিনিধিঃ
বগুড়ার কাহালুতে টাকা চেয়ে দেয়ালে দেয়ালে হুমকির পোস্টার লাগানো সেই বিষ্ণুপুর গ্রামে আতঙ্ক কাটলেও পুরোপুরি কাটেনি শঙ্কা।
তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সার্বক্ষণিক তদারকির কারণে গ্রামবাসী কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছে।
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) বিকালে বিষ্ণুপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, দুর্বৃত্তদের লাগানো হুমকির পোস্টার অনুযায়ী ৬ অক্টোবর ছিল দাবিকৃত টাকা বাক্সে রাখার শেষ দিন। তবে লোয়া পুকুরে সোলার লাইটের সঙ্গে কোনো বক্স দেখা যায়নি।
বগুড়া পুলিশ সুপার (এসপি) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, আমাদের টিম বিষ্ণুপুর গ্রামে ২৪ ঘন্টা ডিউটি দিচ্ছেন। শুধু ৬ তারিখ কেন তাদের নিরাপত্তার জন্য যতদিন লাগবে পুলিশ সার্বক্ষণিক সেখানে থাকবে। আর আমরা দ্রুত এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারব বলে আশাবাদী।
আব্দুল করিম নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, আমার কাছে তিন হাজার টাকা চেয়ে বাড়ির দেয়ালে পোস্টার লাগানো হয়েছিল। প্রথম দিকে একটু ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ এবং র্যাবের সার্বক্ষণিক টহলে সে ভয় কেটে গেছে।
মাহবুব হাসান নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, হুমকিদাতা নিজেই ভয় পেয়েছে। তাই সোলার লাইটের সঙ্গে কোনো বক্স লাগায়নি। আমরা সবাই সতর্ক আছি।
মরিয়ম বেগম নামে এক গৃহবধূ বলেন, ভয় কিছুটা এখনও আছে। কারণ ঘরে মেয়ে আছে। কাউকে কোনো টাকা দিব না। কিন্তু কাল যেহেতু ৭ তারিখ তাই ক্ষতি যদি হয় সেই ভয়ে আছি।
গত ১ অক্টোবর বিষ্ণুপুর গ্রামের ৩০০ /৪০০ ঘরের দেয়ালে ‘স্যাডো’ বাহিনীর পোস্টার লাগানো দেখা যায়। সেখানে লেখা, আসসালামু আলাইকুম, সর্বনিম্ন ২০০ থেকে ৫০০০ টাকা ৬ তারিখের মধ্যে দিতে হবে। না হলে ৭ তারিখের থেকে আপনাদের ছেলে-মেয়ে হারায় গেলে আমার কোনো কিছু করার থাকবে না। আমি বা আমরা কে সেটা না খুঁজে আমি যা বলছি সেটা করার চেষ্টা করেন। তাহলে কিচ্ছু হবে না। অল্প কিছু টাকার জন্য বাচ্চাদের বিপদে ফেলবেন না। যদি ছেলে মেয়েদের মঙ্গল চান তাহলে লোয়া পুকুরে সোলার লাইটের সঙ্গে যে বক্স থাকবে নিজের টাকার সঙ্গে নাম কাগজে লিখে ওই বক্সে ফেলবেন। আর নিজের বাচ্চাকে সুরক্ষিত রাখুন। আমার এই কাগজ আপনি পড়ছেন, তাহলে মনে করেন আপনার ছেলে-মেয়েকে তুলে আনতেও পারব। দয়া করে টাকাটা দিয়েন আমরা ছেলেগুলা ভালো না। ভালো থাকবেন ৬ তারিখ পর্যন্ত, আল্লাহ হাফেজ। এরপর ইংরেজিতে Shadow লেখা দেখা যায় পোস্টারে।
সকালে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির দেয়ালে এমন পোস্টার লাগানো দেখে ভীত এবং আতঙ্কিত হয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা। পরে পুলিশ, র্যাব এবং গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তবে ঘটনায় ছয় দিন পেরিয়ে গেলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এখনও কোন কূল কিনারা খুঁজে পাননি।