মোঃ সারোয়ার হোসেন অপু
স্টাফ রিপোর্টারঃ
নওগাঁর মহাদেবপুর ও মান্দা উপজেলায় ‘আত্রাই নদীর’ উভয় তীরের মোট ৫ স্থানে নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পানি বন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ১৫শ’ পরিবার। পানিতে তলিয়ে গেছে ইট ভাটা, মন্দির সহ হাজার বিঘা জমির আউশ ও আমন ধানের ক্ষেত। ভেসে গেছে পুকুরে থাকা মাছ। চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন বন্যা কবলিত এলাকার মানুষজন। এরমধ্যে মহাদেবপুর সদর ইউনিয়নে মঙ্গলবার সকাল সারে ৯ টারদিকে আত্রাই নদীর বেড়িবাঁধ হঠাৎ করেই ভেঙ্গে যায়। বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার খবর পেয়ে প্রথমে মহাদেবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান ও তরুন সমাজ সেবক সাঈদ হাসান তরফদার শাকিল ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেন এবং সাথে সাথে ঘটনাটি জানালে মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এভাঙ্গনে মহূর্তের মধ্যে একটি ইট ভাটা সম্পূর্ণ ও মন্দীর তলিয়ে যায়। এসময় পুকুরের মাছ সব ভেঁসে যায়।
অপরদিকে নওগাঁর মান্দা উপজেলায় ‘আত্রাই নদীর’ উভয় তীরের মোট ৪ স্থানে নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পানি বন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত পক্ষে ১৫শ’ পরিবার। পানির নিচে তলিয়ে গেছে হাজার বিঘা জমির আউশ ও আমন ধানের ক্ষেত। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানায়, মান্দাতে বিপৎ সীমার ১০০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। এতে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ মূল বাঁধের বেশকিছু স্থান ইতি মধ্যেই চরম ঝঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় আতঙ্কে দিন ও রাত পার করছেন নদী পাড়ের মানুষ। এ অবস্থায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ টিকিয়ে রাখতে ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট গুলোতে বস্তায় বালু ভরে মেরামতের একটানা কাজ করছে শ্রমিকেরা। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় এসব কাজ বাস্তবায়ন করছে মান্দা উপজেলা প্রশাসন। মান্দাতে বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে উপজেলার নুরুল্লাবাদ ইউনিয়ন এর ৭টি গ্রাম। এ ইউনিয়নের নুরুল্লাবাদ ও পারনুরুল্লাবাদ এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ৪শ’ টি পরিবার এবং ফকিন্নি নদীর তীরবর্তী এলাকায় আরো অন্তত ৬শ’ টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া প্রসাদপুর ইউনিয়নের বাইবুল্যা ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের কয়লাবাড়ী এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন আরো ৫শ’ পরিবার। নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার সকাল থেকে আত্রাই নদীতে পানি বাড়তে শুরু করে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত এ পানি বেড়ে এখন বিপৎসীমার ১০০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। আগামীকাল বুধবার পর্যন্ত এ নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে আরো কয়েকদিন পানি বাড়তে পারে। নুরুল্লাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এ ইউনিয়নের ৭টি গ্রামের অন্তত ১হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব গ্রামের পানিবন্দি মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, এরই মধ্যে বন্যা কবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে এবং ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট গুলোতে বস্তায় বালু ভর্তি করে মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সার্বক্ষনিক তদারকি করা হচ্ছে।