শহিদুল ইসলাম (ধনবাড়ী) টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান এর প্রচার প্রচারণায় শিক্ষকসমাজ ও সকল শ্রেণীর মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে সর্বজনীন পেনশন স্কিম।
গত বুধবার ২৪ এপ্রিল সকাল ১১টায় উপজেলার নির্বাহী অফিসার এর কার্যলয়ে উপজেল মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের উপস্থিতিতে পাইস্কা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন তালুকদার, ধনবাড়ী মমতাজ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম, ধনবাড়ী সাকিনা মেমোরিয়াল গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ মাহবুবুর রহমান খানসহ আরো অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকা সর্বজনীন পেনশন স্কিম এর আবেদন পত্র টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান এর হাতে তুলে দেন ।
বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে পেনশনের আর্থিক নিরাপত্তা থাকলেও বাকিদের জন্য নেই ভবিষ্যতের কোনো আর্থিক নিরাপত্তা। সব মিলিয়ে বার্ধক্যের জন্য যে দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতি নেয়া প্রয়োজন । একটি নির্দিষ্ট বয়সের পর থেকে একটি সঞ্চয়ের ব্যবস্থা করা গেলে বৃদ্ধ বয়সে কিছুটা হলেও আর্থিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পাওয়া যায়।
এবার দেশে চালু হয়েছে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা। সরকারি চাকরিজীবী ছাড়া সকল বয়সীরা সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার আওতাভুক্ত হতে পারবে। প্রত্যেকে ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত প্রতি মাসে নির্দিষ্ট হারে চাঁদা পরিশোধ করে ৬০ বছর পর থেকে আজীবন প্রতি মাসে পেনশন পাবেন।
চারটি স্কিমের মাধ্যমে এই সর্বজনীন পেনশন প্রকল্প চালু হচ্ছে। স্কিমগুলোর নাম হলো : প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা। প্রবাস স্কিমটি শুধু প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য। প্রগতি স্কিম বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য । সুরক্ষা স্কিম হচ্ছে অনানুষ্ঠানিক খাত। স্বকর্মে নিয়োজিত যেমন: রিকশাচালক, কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতি ইত্যাদি পেশার মানুষেরা এ স্কিমের অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। আর সমতা স্কিম হচ্ছে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য, যাদের বার্ষিক আয় ৬০ হাজার টাকার কম।
সর্বজনীন পেনশন স্কিমের মৌলিক কিছু নিয়ম, সকল বয়সী সব কর্মক্ষম নাগরিক সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। পেনশনধারীরা আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করবেন। প্রগতি, প্রবাস, সমতা ও সুরক্ষা স্কিমে অংশ নেয়ার পর ৬০ বছর বয়স থেকে আজীবন পেনশন প্রাপ্য হবেন।
ধনবাড়ী উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শিক্ষকরা এগিয়ে আসলে এই সর্বজনীন পেনশন স্কিম দ্রুত বিস্তার ও প্রসার করা সম্ভব । সর্বজনীন পেনশন কার্যক্রম চালু হলে ভবিষ্যতে জনগণের মধ্যে এক ধরনের নিরাপত্তাবোধ জন্ম নেবে। বয়স্ক মানুষরা যেভাবে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবে, সেই ভাবনা তাদের মধ্যে আর থাকবে না। এতদিন আমরা শুনতাম উন্নত দেশগুলোয় এ ধরনের উদ্যোগ চালু আছে, কিন্তু আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশ যে এটা করতে পারে, সত্যিকার অর্থেই একটা যুগান্তকারী ঘটনা বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ।
বাংলাদেশকে একটি সমাজ কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য চালু হলো সর্বজনীন পেনশন স্কিম । বর্তমানে দেশে শুধু সরকারি কর্মচারীরা পেনশন পেলেও বেসরকারি চাকরিজীবীসহ সবাইকে পেনশনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের । এই বাংলাদেশ হবে সকল স্তরের নাগরিকদের নিয়ে সত্যিকার অর্থের একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র। যেখানে কেউ পিছিয়ে থাকবে না। এই যাত্রায় নতুন বাহন সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা যুক্ত হলো যা চালু হলে বয়স্কদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি, দারিদ্র্য ও বৈষম্য দূর হবে ।