চোরকে পুলিশে দেওয়ায় বাড়িঘর ভাঙচুরসহ ২০ জনকে আহত করার অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি, শরীয়তপুর

আছিফুর রহমান

চোরকে বেঁধে পুলিশ খবর দেওয়ায় মেম্বারসহ তার সমর্থকদের বাড়িঘর কুপিয়ে প্রায় ২০ জনকে আহত করার অভিযোগ উঠেছে এক চোর ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে। ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এই ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করেনি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই ইউপি সদস্য।

গত শনিবার(২৮ অক্টোবর) শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিকন্দী ইউনিয়নের দক্ষিণ শৌলা গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ শৌলা গ্রামের সিরাজ মৃধার বাড়িতে চুরি করতে আসে পার্শ্ববর্তী শৌলপাড়া ইউনিয়নের গয়ঘর গ্রামের দুলাল তপাদার। সিরাজ মৃধার স্ত্রী মাকসুদা বেগম চোরকে হাতেনাতে ধরে বাড়ির অন্যদের সহযোগিতায় বাড়ির সামনে বেধে রাখে। সিরাজ মৃধা বিষয়টি চিকন্দী ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য ফারুক মাদবরকে জানালে তিনি বিষয়টি চিকন্দী পুলিশ ফাড়িকে অবগত করেন। এরপর চিকন্দী পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক পুষ্পেন দেবনাথ চোর দুলাল তপাদারকে আটক করে ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। এই খবর দুলাল তপাদারের আত্মীয় স্বজন জানতে পেরে ইউপি সদস্য ফারুক মাদবর ও মামুন মাদবরের বাড়িঘরে হামলা চালায়। হামলায় প্রায় ২০ জন আহত হয় ও প্রায় ৫ টি বাড়ি ঘর কুপিয়ে বসবাসের অযোগ্য করে দেয়। আহতদের মধ্যে বর্তমানে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলসহ শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ইউপি সদস্য ফারুক মাদবর, মামুন মাদবর, মাসুদ মাদবর, ইদ্রিশ মাদবর, মিতু আক্তার, মাকসুদা বেগম, নিপা আক্তার, নাজমা বেগম।

ফারুক মাদবরের ভাই বোরহান মাদবর বলেন, চোর ধরে পুলিশে সোপর্দ করা সত্ত্বেও পুলিশ অজ্ঞাত কারণে চোরকে ছেড়ে দিয়েছে। পুলিশ গড়িমসি করে ঘটনার ৭ দিন পরে মামলা নিয়েছে। কিন্তু এখনও ঘটনাস্থল পরিদর্শন বা কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। একজন ইউপি সদস্য মানুষকে নিরাপত্তা দিতে গিয়ে চোরকে পুলিশে দিয়েছেন কিন্তু পুলিশ চোর ছেড়ে দিয়ে এখন আসামী ধরতে গড়িমসি করছে।

মামলার বাদী মো. মামুন মাদবর বলেন, চোর ধরলে যে এমন করুণ পরিণতি হয়, তা আমার জানা ছিল না। পুলিশ চোর যেন ভাই ভাই। তারা চোর ও অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়নি এখনও।

ইউপি সদস্য ফারুক মাদবর বলেন, জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে মেম্বার বানিয়েছে। আমি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়ে পুলিশকে চোর আটকের কথা জানানোয় এই ঘটনা ঘটিয়েছে রাজ্জাক ফকির ও অন্যান্যরা। পুলিশ এখনও আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি৷ আমি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় পরিষদের কার্যক্রমও ব্যহত হচ্ছে। দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাই আমি।

পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহাম্মেদ বলেন, বিষয়টি মামলার আয়ু কাজী আব্দুর রহিম জানেন। আপনি তার সাথে কথা বলুন। কাজী আব্দুর রহিমের কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হরতাল ছিল বলে হরতালের ডিউটি করেছি। কাজ শেষ করে বিষয়টি দেখব আমি।

এবিষয়ে শরীয়তপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, চিকন্দী ইউনিয়নে মারামারি হয়েছে শুনেছি। মেম্বারসহ কয়েকজন আহত হয়েছে তারা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। থানায় মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। মেম্বার সাহেব লিখিত অভিযোগ দিলে উপজেলা প্রশাসন থেকে ব্যাবস্থা নেয়া হবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *