ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ব্যাচ সংবর্ত-৩৬ এর ব্যাচ ডে উদযাপনকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি অবমাননা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২ টায় ব্যাচ ডে চলাকালে জুতা পায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ ম্যুরালের বেদীতে উঠতে দেখা যায় অনুষ্ঠানে আগত অনেক শিক্ষার্থীকে। এসময় তারা সেখানে আনন্দ-উল্লাস, ফটোসেশন ও কালার ফেস্ট পালন করেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
জানা যায়, এদিন সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে আনন্দ র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি ক্যাম্পাস্থ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রধান ফটকে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে দুপুর ১২টার দিকে ফ্ল্যাশমব ও কালার ফেস্ট শুরু হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা একে অপরের দিকে রং ছুড়তে থাকেন। এর এক পর্যায়ে গ্রুপ ফটো তোলার জন্য মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালে সামনে সমবেত হলে তাদের মধ্যে ২০ থেকে ২৫ জন জুতা পায়ে ম্যুরালের বেদীতে উঠে যান এবং বাকিরা নিচে অবস্থান করেন। ছবি তোলার সময় শিক্ষার্থীদের রঙ ছোড়াছুড়ি, ব্যাচের নামে স্লোগান দিতে দেখা যায়। এভাবে প্রায় দুই ঘন্টা যাবৎ শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিকভাবে জুতা পায়ে ম্যুরালে অবস্থান করেন। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের গায়ে পরিহিত টি-শার্টে বিভিন্ন অশ্লীল, কুরুচিপূর্ণ ও প্রকাশে আযোগ্য ভাষা সম্বলিত লেখা দেখা যায়। এর মধ্যে শিক্ষিকা ও মেয়েদের নিয়েও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করতে দেখা যায় অনেককে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, ‘এভাবে জুতা পায়ে ম্যুরালে উঠে যাওয়া কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার সুযোগ নেই। এইমাত্র ঘটনাটি শুনলাম। বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে বিষয়টা দেখছি।
সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, ‘জাতির পিতার ম্যুরাল আমাদের সকলের কাছে শ্রদ্ধা, আবেগ এবং ভালোবাসার জায়গা। এভাবে সেখানে জুতা পায়ে উঠে উল্লাস করা এবং রঙ ছোড়াছুড়ি করা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং জঘন্য একটি কাজ। এটা তাদের উচিৎ হয়নি। আমরা বিষয়টা প্রশাসনকে অবহিত করবো এবং এ বিষয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাবো।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে ব্যাচের সমন্বয়ক ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মারুফ হোসেন বলেন, ‘আমরা সবাইকে ম্যুরালে উঠতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু কেউ আমাদের কথা শোনেনি। আর এটা আমাদের প্রথম আয়োজন, যার কারণে ভুল হয়ে গেছে। সামনের আয়োজনগুলোতে আর এই ধরনের ভুল হবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘কিছু শর্ত সাপেক্ষে তাদেরকে এই অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টা আমাদের নজরে এসেছে। পরে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের সেখানে পাঠিয়েছি। বিষয়টা মনিটরিং করা হচ্ছে। শনিবারে এ বিষয়ে বসবো।